বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বেতন-ভাতার দাবিতে দুই গার্মেন্টে বিক্ষোভ, ভাঙচুর

সাভার প্রতিনিধি

সাভারে বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে কারখানায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে একটি তৈরি পোশাক কারখানার প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে ব্যাপক ভাঙচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। মঙ্গলবার দুপুরে সাভারের বিরুলিয়া সড়কের শাহীবাগে আজিম গ্রুপের গ্লোবাল আউটার লিমিটেড ও গ্লোবাল ফ্যাশন গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানায় এ শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। এদিকে শ্রমিক অসন্তোষের মুখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারখানা দুটিতে এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজিম গ্রুপের গ্লোবাল আউটার লিমিটেড ও গ্লোবাল ফ্যাশন গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক গত সোমবার থেকে তাদের নভেম্বর মাসের বকেয়া বেতন ও ওভারটাইমের দাবিতে কর্মবিরতিসহ বিক্ষোভ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালেও শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশের পর কাজ না করে দাবি আদায়ে কর্মবিরতিসহ বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলে শিল্প পুলিশের সদস্যরা শ্রমিকদের কারখানা থেকে বের করে দেন। কিন্তু বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ে বিক্ষোভ ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে।

 পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপসহ লাঠিচার্জ করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কারখানার দুই কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। ৬ষ্ঠ তলার সুইং অপারেটর মো. শাহিন ও ৩য় তলার সুইং অপারেটর মো. লিটন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের এক মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে যা গত রবিবার পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ রবিবার দুপুরে কিছু শ্রমিককে বেতন দিলেও বাকিদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। মঙ্গলবার শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে কারখানার ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. জাহিদুল হক ও সহকারী ব্যবস্থাপক (কোয়ালিটি শাখা) মইনুল ইসলাম আগামী ৩০ ডিসেম্বর বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা জানালে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এ সময় কারখানার নিজস্ব বাহিনী দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন তারা।

আজিম গ্রুপের ব্যবস্থাপক (অ্যাডমিন ও অর্থ) এম এ আকবার হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময়ে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করে থাকি। কিন্তু সম্প্রতি কারখানায় কাজ কমে যাওয়ায় এই মাসে আমাদের বেতন পরিশোধে সময় লাগছে। তবে খুব শিগগিরই শ্রমিকদের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করা হবে বলে জানান তিনি। আশুলিয়া শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নাসের জনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানায় ভাঙচুরের পাশাপাশি সড়কে অবস্থান নিয়ে যানচলাচলে বিঘ্ন ঘটালে আমরা তাদের সরিয়ে দেই। এ ছাড়া যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারখানায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর