বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

ভাঙা হচ্ছে ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি!

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

ভাঙা হচ্ছে ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি!

সাইকেল গ্যারেজ তৈরির জন্য বাংলা চলচ্চিত্রের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি ভেঙে ফেলছে  রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে বাড়ির একটি অংশ পুরো ভেঙে তার ইট, সিমেন্ট ও সুরকি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। রাজশাহী মহানগরীর মিঞাপাড়ায় অবস্থিত এ বাড়ি ভাঙার প্রতিবাদ জানিয়ে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে ১৩টি সাংস্কৃতিক সংগঠন। দাবি জানিয়েছে, ঋত্বিকের শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের স্মৃতিবিজড়িত এ ভিটায় ঋত্বিক স্মৃতি জাদুঘর গড়ে তোলার। লিখিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি ঋত্বিক কুমার ঘটকের রাজশাহী মহানগরীর মিঞাপাড়ার বাড়িতে শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের একটি অংশ কেটেছে। এ বাড়িতে কিছু সময় বসবাস করেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীও।

এ বাড়িতে থাকার সময়ই ঋত্বিক ঘটক রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়েছেন। তিনি রাজশাহী কলেজ এবং মিঞাপাড়ার সাধারণ গ্রন্থাগার মাঠে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে নাট্যচর্চা করেছেন। ঋত্বিক ঘটক এ সময় রাজশাহীতে ‘অভিধারা’ পত্রিকা সম্পাদন করেছেন।

 বিলুপ্ত কল্পনা হলের ‘ভাবীকাল’ নামে একটি চলচ্চিত্রের ব্যানারও এঁকেছেন বলে জানা যায়। সেই বাড়িটিই এরশাদ সরকারের আমলে ১৯৮৯ সালে নামমাত্র মূল্যে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজকে ইজারা দেওয়া হয়। তারাই এখন সম্পূর্ণ বাড়িটি ব্যবহার করছে। বাড়িটির এক অংশে ইতিমধ্যে বহুতল ভবন করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আরেক অংশে যেসব কক্ষে ঋত্বিকরা থাকতেন সেসব কক্ষও ব্যবহার করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তারই এক অংশ ভেঙে অস্থায়ী সাইকেল গ্যারেজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। রাজশাহী থিয়েটারের সাবেক সভাপতি কামার উল্লাহ সরকার বলেন, ঋত্মিকের শেষ স্মৃতিচিহ্নটি ভেঙে ফেলছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এ নিয়ে তারা আন্দোলনে যাচ্ছেন। চলচ্চিত্র সংগঠক সাজ্জাক বকুল বলেন, এটা নিন্দনীয়। দ্রুত নির্মাণকাজ বন্ধ করে ঋত্বিকের পৈতৃক ভিটা সংরক্ষণ করে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানায়। একই সঙ্গে এ ভিটায় ঋত্বিক ঘটক স্মৃতি জাদুঘরও গড়ে তোলার দাবি জানায়। রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহম্মদ শরিফুল হক জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে তারা ব্যবস্থা নেবেন।

সর্বশেষ খবর