শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
বিমান বাহিনীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী

স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হবে

যশোরে বিমান বাহিনী একাডেমিতে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোর্স সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে ক্যাডেটদের মধ্যে ট্রফি প্রদান করেন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আপনারা শপথ গ্রহণ করেছেন। এ শপথের মধ্য দিয়ে আজ থেকে আপনাদের ওপর ন্যস্ত হচ্ছে দেশের মহান স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব।’ তিনি বলেন, ‘দেশমাতৃকার প্রয়োজনে এই পবিত্র দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে আপনাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’ গতকাল সকালে যশোরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমিতে ৭৬তম বাফা কোর্স ও ডিই-২০১৮ কোর্সের সমাপনীতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০১৯ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে দুটি কোর্সে ৩০ জন মহিলা অফিসার ক্যাডেটসহ মোট ১০৪ জন অফিসার ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন। প্রধানমন্ত্রী নতুন কমিশন পাওয়া অফিসারদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘আপনারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আদেশ মেনে চলবেন, চেইন অব কমান্ড বজায় রাখবেন, অধস্তনদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবেন। তাহলেই বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।’ তিনি বলেন, ‘সততা, একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে বিমানবাহিনীর ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও সামরিক কৌশলগত দিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিধি ও সম্ভাবনার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে জাতির পিতা একটি আধুনিক, শক্তিশালী ও পেশাদার বিমানবাহিনী গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি বলেন, জাতির পিতার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তে স্বাধীনতার পরপরই বিমানবাহিনীতে সংযোজিত হয় সে সময়কার অত্যাধুনিক মিগ-২১ সুপারসনিক ফাইটার বিমানসহ পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার, এয়ার ডিফেন্স রাডার। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের এভিয়েশন সেক্টরকে এগিয়ে নিতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী নিজস্ব জনবল, প্রযুক্তি ও কারিগরি দক্ষতা ব্যবহার করে ফাইটার বিমানের ওভারহোলিং করতে সক্ষম। তিনি বলেন, ক্যাডেটদের মৌলিক প্রশিক্ষণ ও প্রাতিষ্ঠানিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের মেয়াদকাল বৃদ্ধি এবং ডিজিটাল ককপিটসংবলিত কমব্যাট প্রশিক্ষণ বিমান এবং পরিবহন প্রশিক্ষণ বিমানসহ হেলিকপ্টার সিমুলেটর স্থাপন করা হয়েছে। বিমানবাহিনী একাডেমির জন্য অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি প্রশিক্ষিত ও আধুনিক বিমানবাহিনী গঠনে এ উদ্যোগ যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা রাখি।’ আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ এবং ক্যাডেটদের মাঝে পদক, সনদপত্র ও ফ্লাইং ব্যাজ বিতরণ করেন। অফিসার ক্যাডেট মাহিম মালিক ৭৬তম বাফা কোর্সে সেরা চৌকস কৃতিত্বের জন্য ‘সোর্ড অব অনার’ এবং অফিসার ক্যাডেট আহনাফ ফাহিম উড্ডয়ন প্রশিক্ষণে সেরা কৃতিত্বের জন্য ‘বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ট্রফি’ লাভ করেন। ৭৬তম বাফা কোর্স (গ্রাউন্ড ব্রাঞ্চ)-এ সেরা কৃতিত্বের জন্য অফিসার ক্যাডেট যারিন তাসনিম ‘বিমানবাহিনী প্রধানের ট্রফি’ লাভ করেন। অফিসার ক্যাডেট সিফাত হাসান আলম জেনারেল সার্ভিস প্রশিক্ষণে কৃতিত্বের জন্য ‘কমান্ড্যান্টস্ ট্রফি’ লাভ করেন। ২ নম্বর স্কোয়াড্রন চ্যাম্পিয়ন বিবেচিত হয়ে একাডেমি পতাকা লাভ করে। অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, সংসদ সদস্য এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, বৈদেশিক মিশনের কূটনীতিক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অভিভাবকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিমানবাহিনী একাডেমিতে এসে পৌঁছালে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত ও বিমানবাহিনী একাডেমি কমান্ড্যান্ট এয়ার কমডোর হায়দার আবদুল্লাহ্ তাঁকে স্বাগত জানান।

সর্বশেষ খবর