শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

শীতে স্বস্তিতে কাঁচাবাজার কমেনি পিয়াজের দাম

বাজার দর

নিজস্ব প্রতিবেদক

শীতে স্বস্তিতে কাঁচাবাজার কমেনি পিয়াজের দাম

শীতের তীব্রতা ও হঠাৎ বৃষ্টিতেও স্বস্তিতে রয়েছেন রাজধানীর নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের ক্রেতারা। কনকনে শীতে বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি কিছুটা কম। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে আরেক দফা কমেছে সব ধরনের শীতকালীন সবজির দাম। ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, মুলা, শালগম, শিমসহ শীতের সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে বাজারে। তবে করলার দাম এখনো বেশি। স্বস্তি ফিরেনি পিয়াজের দামেও। অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের দাম। এ ছাড়া মাংস, ডিম, মুরগি, ডাল, চাল, চিনি ও ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে আগের দামে।

গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মগবাজার, রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও, হাজীপাড়া, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি বাজার, ফকিরাপুল কাঁচাবাজার ও শান্তিনগর কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে কেজিপ্রতি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০, টমেটো ৪০ থেকে ৬০, শিম ৩০ থেকে ৪০, বেগুন ৩০ থেকে ৬০, নতুন আলু ৩০ থেকে ৪০ ও পুরনো আলু ২০ থেকে ২৫ টাকায়। এ ছাড়া দাম কমে প্রতি কেজি পটোল বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০, ধুন্দল ৪০ থেকে ৫০, ঢেঁড়স ৪০, পেঁপে ১৫ থেকে ২৫, কচুর লতি ৪০ থেকে ৬০, শসা ৪০ থেকে ৬০ ও ক্ষিরা ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। তবে কিছুটা বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। বাজারভেদে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়। এ ছাড়া ৫ থেকে ১০ টাকা কমে আকারভেদে প্রতিটি বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫, ফুলকপি ১৫ থেকে ২৫ ও লাউ ৩০ থেকে ৬০ টাকা। এসব বাজারে প্রতি আঁটি কচুশাক ৫, লালশাক ৮ থেকে ১০, মুলা ৮ থেকে ১০, পালংশাক ৮ থেকে ১৫, পুঁইশাক ১৫ থেকে ২০ ও লাউশাক ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৬০-৭০ টাকা। এনিয়ে খিলগাঁও কাঁচাবাজারের দোকানি আহমেদ কামাল আলম বলেন, করলার সরবরাহ কম। এ কারণে দাম একটু চড়া। শীতের সবজির দাম কম রয়েছে, সামনে আরও কমবে। তবে করলার দাম সহসা কমার সম্ভাবনা নেই। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী আল মামুন বলেন, প্রতি বছরই এ সময়ে করলার দাম বেশি থাকে। কাজেই বাজারে এখন করলার যে দাম তা অস্বাভাবিক না। আবার যখন করলার সরবরাহ বাড়বে তখন স্বাভাবিকভাবেই দাম কমে যাবে। এদিকে বাজার ও মানভেদে আমদানি করা ছোট পিয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা। আর নতুন দেশি পিয়াজের কেজি ১০০-১২০ টাকা। আমদানি করা বড় পিয়াজের কেজি ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী জুয়েল রহমান বলেন, বাজারে এখন পিয়াজের ঘাটতি নেই। ভালো মানের দেশি পিয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। সামনে বৃষ্টি না হলে কিছুদিনের মধ্যে পিয়াজের দাম কমে যাবে বলে আশা করছি।

রামপুরার বাসিন্দা হাসান কাওসার বলেন, শিম, গাজর, ফুলকপির দাম কিছুটা কমলেও বেশিরভাগ সবজির দাম এখনো বেশ চড়া। অথচ বাজারে সব ধরনের সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। ভালো মানের পাকা টমেটোর কেজি ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। পিয়াজের দাম তো ১০০ টাকার নিচে নামছে না। আসলে বাজারে কার্যকর নজরদারি না থাকায় এ অবস্থা। বাজারে কঠোর নজরদারি থাকলে অনেক কিছুর দাম কমে যেত। বাজারে প্রতি কেজি (কেজি সাইজ) ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায়, ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা কেজি। জাটকা ইলিশের কেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি কাঁচকি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০, মলা ৩২০ থেকে ৪০০, দেশি পুঁটি (জীবন্ত) ৫০০ থেকে ৬০০, শিং ৩৫০ থেকে ৭৫০, পাবদা ৪৫০ থেকে ৫০০, চিংড়ি (গলদা) ৫০০ থেকে ৬০০, বাগদা ৫৫০ থেকে ৯০০, দেশি চিংড়ি ৩৫০ থেকে ৫০০, রুই (আকারভেদে) ২৮০ থেকে ৩৫০, মৃগেল ২৫০ থেকে ৩০০, পাঙ্গাস ১৪০ থেকে ১৮০, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ২০০, কৈ ২০০ থেকে ২২০ ও কাতল ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা।

এসব বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৩০, লেয়ার ২০০ থেকে ২২০, সাদা লেয়ার ১৮০ থেকে ১৯০ ও সোনালি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া গরুর গোস্তের কেজি ৫৫০, খাসি ৭৮০ ও ছাগল ৭২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত রয়েছে ডিম, ডাল, চাল, চিনি ও ভোজ্যতেলের দাম।

সর্বশেষ খবর