শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বাঘা বগলা

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

বাঘা বগলা

বাঘা বগলা একটি দুর্লভ পাখি। শুধু নামে নয়, এর আচরণও যে কাউকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতো। এর ইংরেজি নাম ‘গ্রেট বিটার্ন’। আর বৈজ্ঞানিক নাম ‘বাটরাস স্টেলারিস’। এরা নিশাচর প্রাণী। ২৪ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল হাইল হাওরে এর দেখা মেলে। উপজেলার মির্জাপুর এলাকার কানাই সরকার হাওরে মাছ শিকারের জন্য পেতে রাখা বরশিতে আটকা পড়ে এই বাঘা বগলা। পরে এনে রাখা হয় বণ্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে। সেবা ফাউন্ডেশনে পরিচালক সজল দেব জানান, বৃহস্পতিবার এই বাঘা বগলাকে লাউয়াছড়ায় অবমুক্ত করা হয়েছে।

পাখি বিষারদরা জানান, পৃথিবীতে মাত্র ১২ জাতের বগলা আছে, বাংলাদেশে আছে চার জাতের কালা বগলা, হলদে বগলা, খয়রা বগলা ও বাঘা বগলা। বাঘা বগলা বাংলাদেশের সবচেয়ে বিরল বগলা। এরা রাতেই বেশি চলাফেরা করে। কখনো মানুষের সামনে পড়তে চায় না। তবে হঠাৎ মুখোমুখি হলে সে ভয় পেয়ে উল্টো ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। ডোরাকাটা পালক ফুলিয়ে, ডানা ছড়িয়ে, মাথার মুকুট খাড়া করে, বল্লমের মতো ঠোঁটে নিরিখ বেঁধে পাখিটি ভয়ঙ্কর মূর্তি ধারণ করে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই শিকারে বেরোয়। এরা সাপ, ব্যাঙ, গিরগিটি আর নিশাচর কীটপতঙ্গ খেয়ে জীবন ধারণ করে। এরা কখনো বাংলাদেশে বাসা বাঁধে না; ইউরোপ ও এশিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চলই এদের প্রজননভূমি। মার্চ-জুন মাসে এরা ডিম দেয়। মেয়ে পখিরাই বাসা বাঁধে, ডিমে তা দেয়, এমন কি  বাচ্চাও বড় করে। ডিম ফোটার পর বাচ্চা বড় হতে প্রায় দুই মাস সময় লাগে। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ইনাম আল হক বলেন, পৃথিবীতে এই পাখিটির সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে। দশ বছর আগে একবার শ্রীমঙ্গলের হাওরে দেখা যায়। হাওরে বরশিতে আটকা পড়া খুবই দুঃখজনক। এদের জন্য হওরের জলাশয়গুলো নিরাপদ রাখতে হবে। কোনো ভাবেই হাওরে বরশি, জাল বা কোনো ফাঁদ পাতা যাবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর