সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে বক্তারা

আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতি করেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেছেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতি করে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ কাজ করেছে। এটা সংবিধানবিরোধী কাজ। তারা মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নিয়েছে। এদের সরিয়ে ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। তাই আসুন- সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।’

গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে ‘ভোট ডাকাতির বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষে এক বিক্ষোভ সমাবেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা এ আহ্বান জানান। সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে বের হলে ঐক্যফ্রন্ট নেতা-কর্মীদের পুলিশ বাধা দেয়। আর সে বাধার প্রতিবাদে আজ সোমবার রাজধানীর মৎস্যভবন মোড়ে আবারও বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছে ঐক্যফ্রন্ট। জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে গণফোরামের মোস্তাক আহমেদ ও ঐক্যফ্রন্টের জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর পরিচালনায় এ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, কাজী আবুল বাশার, গণফোরামের অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ, জগলুল হায়দার আফ্রিক, জেএসডির তানিয়া রব, সানোয়ার হোসেন তালুকদার, নাগরিক ঐক্যের শহিদুল্লাহ কায়সার, বিকল্পধারার অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথি হিসেবে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন থাকার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণে তিনি আসতে পারেননি। বিক্ষোভ সমাবেশের পর আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বে শতাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে মিছিল শুরু হলে পুলিশ কদম ফোয়ারার আগে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে মিছিলটি আটকে দেয়। নেতা-কর্মীরা সেখানে ৪/৫ মিনিট দাঁড়িয়ে সরকারের ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করে প্রেস ক্লাবের ভিতরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আ স ম রব আবারও বলেন, আমরা কেমন দেশে বসবাস করছি, সেটা আপনারা সবাই দেখছেন। একটা বিক্ষোভ মিছিল করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পুলিশ বাধা দিয়েছে। আজকে এ দেশে কেউ স্বাধীন নয়। সবাইকে সরকার বন্দী করে রাখতে চায়। কিন্তু আমরা এটা হতে দেব না। আমরা আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখব। ডাকসু ভবনের কাছে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা উল্লেখ করে সাবেক ভিপি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘আজকেও ডাকসু ভবনের পেছনে কয়েকটা ককটেল ফাটানো হয়েছে। কারা ফাটায়? প্রক্টর সাহেব জানেন না, ভাইস চ্যান্সেলর জানেন না, রেজিস্টার জানেন না।’ আ স ম রব আরও বলেন, এই ডাকসু ভবন থেকে স্বাধীনতা পতাকা উত্তোলিত হয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশে স্বাধীনতার পূর্বে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়নি একমাত্র বাংলাদেশ ছাড়া। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, ২৯ ডিসেম্বর রাতে যে নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে, সেই নির্বাচন আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা কর্মসূচি দেব। পাটকল শ্রমিক যদি কেউ মারা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপর যদি অত্যাচার আরও বাড়ে, নারী নির্যাতন না কমে, গুম-খুন বন্ধ না হয়, তার বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে আমরা সামনে আসছি। মান্না বলেন, ‘আজ আমাদের ধিক্কার জানানোর দিন। বাঙালি জাতির ইতিহাসে এত বড় কলঙ্কের তিলক কখনো লাগেনি। যেটা গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর রাতে লেগেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো দেশে কোনো ভোটেই এত বড় চুরি হয়নি। পরের দিনের ভোট আগের দিনেই হয়ে যায়। এই ভোট বাতিল করতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে, এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, চলে যেতে হবে সরকারকে। এজন্যই আমাদের আন্দোলন।

সর্বশেষ খবর