শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বৃষ্টি হতে পারে কালও, এরপর শৈত্যপ্রবাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামীকাল রবিবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর ঠান্ডা ও শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে। শৈত্যপ্রবাহ চলবে দুই থেকে তিন দিন। আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক গতকাল সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান।

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়, ঢাকা, খুলনা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু-এক  জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত ও শুক্রবার ভোর থেকে দেশের বেশির ভাগ জেলায় বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল রাজধানীর সকাল ছিল বৃষ্টিভেজা। রাজধানীতে গতকাল ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল ১০টায় সূর্যের মুখ দেখা গেলেও বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে সারা দিন আকাশ ছিল মেঘলা। সারা দিনই রাজধানীতে আবহ ছিল শীতের। বৃষ্টিতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও জনজীবন থমকে যায়। বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরীতে পথচারী ও যানবাহনের সংখ্যাও কমে যায়। শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষ শীতের বৃষ্টিতে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন। আবহাওয়া অধিদফতর গতকাল চট্টগ্রামের মাইজদীকোর্টে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। সেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৬১ মিলিমিটার। এ ছাড়া গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়। সেখানে তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো আরও খবর- পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ে গতকাল দুপুর থেকে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যোগ হয়েছে উত্তর থেকে আসা হিমেল হাওয়ার দাপটও। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। বৃষ্টির কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ।  চুয়াডাঙ্গা : বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে চুয়াডাঙ্গায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গতকাল সকাল পর্যন্ত ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে এবং ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ বিপাকে পড়েছেন। বাগেরহাট : গতকাল ভোররাত থেকে অবিরাম বৃষ্টি ও শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বাগেরহাটের জনজীবন। বৃষ্টির সঙ্গে বয়ে যাচ্ছে দমকা হওয়া। এ কারণে সকাল থেকে লোকজন বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি। রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল ছিলই না বলা যায়। এদিন বিকাল ৫টা পর্যন্ত ২৩.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে কৃষি বিভাগ। সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

নওগাঁ : মধ্যরাত থেকে হঠাৎ করেই শুরু হওয়া বৃষ্টিতে নতুন করে জেঁকে বসেছে শীত। বৃষ্টির সঙ্গে হিমেল হাওয়া শীতের তীব্রতাকে বহুগুণে বাড়িয়েছে। এতে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রেণির মানুষ। তারা বৃষ্টির কারণে বাইরে বের হতে পারেননি।  লালমনিরহাট : লালমনিরহাটে গতকাল ভোর থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। এতে তীব্রতা বেড়েছে শীতের। শৈত্যপ্রবাহ আর হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এ জনপদের মানুষ।

বরিশাল : তীব্র শীত আর বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন। গতকাল ভোররাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২০.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে বরিশালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় মধ্য ডিসেম্বরে ১০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

খুলনা : শীতের সঙ্গে গতকাল ভোর থেকে বৃষ্টি হওয়ায় খুলনায় বেড়েছে ঠান্ডার তীব্রতা। বেলা বাড়লেও সূর্যের দেখা মেলেনি। থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।

সিলেট : সিলেটেও সকাল থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। এ কারণে দুর্ভোগে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ। এ ছাড়া এ দিন রাস্তাঘাটও ছিল অনেকটা ফাঁকা।

মাদারীপুর : মাদারীপুরে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েন নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। হাটবাজার, সড়ক-মহাসড়কে মানুষের উপস্থিতি কমে যায়। কাঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। দূরপাল্লার পরিবহন থেকে নেমে লঞ্চ ও ফেরিঘাটে পৌঁছতে তাদের ভিজতে হয় বৃষ্টিতে। যাত্রী না থাকায় বন্ধ থাকে স্পিডবোট চলাচল।

পিরোজপুর : পিরোজপুরেও ভোর থেকে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এতে ভোগান্তিতে পড়েন জীবিকার টানে ঘর থেকে বের হওয়া সাধারণ মানুষ। ভান্ডারিয়া, মঠবাড়িয়া, ইন্দুরকানি, নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি), কাউখালী, নাজিরপুর ও সদর উপজেলার সব স্থানেই বৃষ্টি হয়েছে।

সর্বশেষ খবর