রবিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজধানীতে পৌষমেলা

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

রাজধানীতে পৌষমেলা

রাজধানীর বাসিন্দাদের কাছে পৌষের গুরুত্ব তুলে ধরতেই শুরু হলো তিন দিনের পৌষমেলা। যন্ত্রসংগীত বাদনের মধ্য দিয়ে গতকাল সকালে বাংলা একাডেমির নজরুল চত্বরে শুরু হয় এই মেলার আনুষ্ঠানিকতা। সকাল ৮টায় মাটির ‘আইলা’ জ্বালিয়ে এ উৎসব উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এ সময় সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘প্রার্থী’ কবিতাটি  আবৃত্তি করেন রফিকুল ইসলাম। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতায় আরও বক্তৃতা করেন পৌষমেলা উদযাপন পরিষদের সহসভাপতি ঝুনা চৌধুরী, গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীর, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ। অনুষ্ঠানে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যম, কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, স্পন্দন ও নৃত্যজন। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে উদীচী, নিবেদন, বহ্নিশিখা এবং সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। একক সংগীত পরিবেশন করেন বিশ্বজিৎ রায়, আবু বকর সিদ্দিক, শারমিন শখী ময়না, নবনীতা জাইদ চৌধুরী, ফেরদৌসী কাকলী প্রমুখ। একক আবৃত্তি করেন লায়লা আফরোজ এবং দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে মুক্তধারা আবৃত্তিচর্চা কেন্দ্র।

‘উইমেনস আর্ট ইন বাংলাদেশ’-এর প্রদর্শনী ‘হুইনি’ : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক গ্রুপ ‘উইমেনস আর্ট ইন বাংলাদেশ’ এর মাধ্যমেই তাদের একসঙ্গে পথচলা। সেই পথচলা থেকেই ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখা। সব প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূলতাকে পাশ কাটিয়ে এবার তারা এক ছাতার নিচে জমায়েত হয়েছে সৃজনশীল কিছু উপহার দেওয়ার প্রত্যয়ে। আর সে লক্ষ্যেই তাদের আয়োজন ‘হুইনি’ নামের শিল্পের পসরা। চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্যের প্রদর্শনী, চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র নির্মাণসহ ইত্যাদি নানা আয়োজনে সাজানো হয়েছে উইমেন আর্টস ইন বাংলাদেশ’-এর পথচলার প্রথম কার্যক্রম। গতকাল বিকালে রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে এই আয়োজন উদ্বোধন করেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মায়া বুটিকসের কর্ণধার তনিমা রহমান।

১৬জন শিল্পীর প্রায় অর্ধশতাধিক শিল্পকর্ম থাকছে এতে। মিশ্রমাধ্যমে আঁকা চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য, ফিল্মমেকিং, ফিল্ম-শো, পোয়েট্রি ও রিকশা পেইন্টিং দিয়ে সাজানো হয়েছে বর্ণিল এই আয়োজন। প্রদর্শনীর চিত্রকর্মগুলোতে নারীর প্রতি বৈষম্য, সহিংসতা ও নানা ধরনের বিরূপ আচরণ তুলে ধরার পাশাপাশি সব প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে নারীর সফলতার গল্পগুলোও উপস্থাপন করেছেন শিল্পীরা। উদ্বোধনকালে তারানা হালিম বলেন, সব প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে নারী সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একদিকে সহিংসতা বাড়ছে, অন্যদিকে নারী তার দক্ষতার মধ্য দিয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সফলতার দিকে নারীর এগিয়ে যাওয়া বর্তমানে একটি আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। নারীদের নিয়ে এমন একটি উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক। আমি এই আয়োজনের সফলতা কামনা করছি। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই প্রদর্শনী। আজ রবিবার শেষ হবে দুই দিনের এই প্রদর্শনী।

কালি ও কলম পুরস্কার প্রদান : কবিতা, কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ ও মুক্তিযুদ্ধ চার বিভাগের চারজন লেখককে প্রদান করা হলো ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ২০১৯’। ‘জলপরিদের দ্বীপে’ কাব্যগ্রন্থের জন্য কবিতায় এবারের পুরস্কার পেয়েছেন কবি হানযালা হান, কথাসাহিত্য শাখায় লালবেজী গল্পগন্থের জন্য নবীন লেখক কামরুন নাহার শীলা, প্রবন্ধ শাখায় ‘সৈয়দ নজরুল ইসলাম : মহাজীবনের প্রতিকৃতি’ নামক গ্রন্থের জন্য ফয়সাল আহমেদ ও মুক্তিযুদ্ধ শাখায় ‘মুক্তিযুদ্ধে ভারতের চিকিৎসা সহায়তা’ গ্রন্থের জন্য এবারের পুরস্কার পেয়েছেন চৌধুরী শহীদ কাদের। গতকাল বিকালে ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। কালি ও কলম সম্পাদকম লীর সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। পুরস্কারপ্রাপ্তদের শংসাবচন পাঠ করেন অধ্যাপক মাহবুব সাদিক ও কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন। অতিথি ছিলেন শিল্পী রফিকুন নবী এবং নাট্যজন আসাদুজ্জামান নূর। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কালি ও কলমের প্রকাশক আবুল খায়ের এবং সম্পাদক আবুল হাসনাত। উপস্থিত অতিথিরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন। অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্তদের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পুরস্কার প্রদান পর্ব শেষে আবৃত্তি করেন আসাদুজ্জামান নূর। শেষে সেতার বাজিয়ে শোনান বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের বিদ্যার্থী সোহিনী মজুমদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর