সোমবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

পাঁচ হাজার বিচারক নিয়োগ দিতে হবে

-এ বি এম খায়রুল হক

পাঁচ হাজার বিচারক নিয়োগ দিতে হবে

আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেছেন, গত ১১ বছরে বিচার বিভাগের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো প্রশংসনীয়। তবে বিচারাধীন মামলাজট কমাতে না পারাটা সরকারের জন্য  চ্যালেঞ্জ। তাই বিচার বিভাগের চলমান মামলাজট নিরসনে যত দ্রুত সম্ভব অন্তত পাঁচ হাজার বিচারক নিয়োগ দিতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বিচারপতি খায়রুল হক বলেন, আমাদের দেশের বিচার বিভাগের মামলা নিষ্পত্তির হার বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক ভালো। মামলার তুলনায় বিচারকের সংখ্যা কম হওয়ায়ই মামলাজট বাড়ছে। তিনি বলেন, কয়েক বছর আগের হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৩২ কোটি মানুষের জন্য ৮৬ হাজার বিচারক ছিল। এখন হয়তো এটা আরও বেড়েছে। সে হিসাবে আমাদের দেশে ১৬ কোটি মানুষের জন্য ৪৩ হাজার বিচারক থাকার কথা। আমাদের ১৬ কোটি মানুষের জন্য মাত্র ১৭০০ থেকে ১৮০০ বিচারক কাজ করছেন। সে তুলনায় আমাদের বিচারকরা অনেক পরিশ্রম করছেন। ফলে মামলাজট দূর করতে আমাদের এই মুহূর্তে অন্তত পাঁচ হাজার বিচারক প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, আমি জেনেছি, বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু আছে। হয়তো কিছু দিনের মধ্যেই আমরা সর্বমোট ২ হাজার বিচারক পাব। তিনি আরও বলেন, বিচারক নিয়োগের পাশাপাশি বিচারকদের লজিস্টিক সাপোর্টটাও জরুরি। প্রতিটি বিচারকের জন্য পাঁচ-ছয়জন স্টাফ প্রয়োজন। এজলাস সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা খবর পাই এখনো কোনো কোনো আদালতে বিচারকরা ভাগাভাগি করে এজলাসে ওঠেন। তাই প্রয়োজনীয় এজলাস বৃদ্ধিতেও সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে। মামলাজট নিরসনে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম হাতে নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেহেতু চার-পাঁচ হাজার বিচারক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, এই সময় তো আর বিচার প্রার্থীরা বসে থাকবেন না। তাই অবসরে যাওয়া বিচারকদের মধ্যে যারা এখনো সক্ষম তাদের পরীক্ষামূলকভাবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

 বিশেষ করে যেসব জেলায় মামলা বেশি ওই জেলাগুলোতে।

উচ্চ আদালতের মামলাজট প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা দেখছি উচ্চ আদালতে যত বিচারপতি নিয়োগ হচ্ছে মামলাজট তত বাড়ছে। তাই হাই কোর্টের বিচারপতিদের উচিত হবে, যে কোনো রুল ইস্যুর আগে আবেদনটির অন্তত ৫০ শতাংশ মেরিট আছে কি-না, তা নিশ্চিত হওয়া। ৫০ শতাংশ মেরিট না থাকলে আবেদনটি নট প্রেস না করে রায় দিয়ে ডিসমিস করে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, একটি রুল জারি করা মানে, নতুন একটি মামলা হওয়া। আর হয়রানিমূলক মামলা করলে পিটিশনারকে জরিমানা করার পাশাপাশি আইনজীবীকে তিরস্কার করার ব্যবস্থা হলেও মামলাজট কমবে বলে মনে করেন সাবেক এই প্রধান বিচারপতি।

সর্বশেষ খবর