বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ব্যবসায় মন্দা, ভালো নেই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

রুহুল আমিন রাসেল

ব্যবসায় মন্দা, ভালো নেই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

ভালো নেই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তাদের সমস্যারও শেষ নেই। ব্যবসায় চলছে মন্দা। নেই প্রয়োজনীয় পুঁজি। তহবিল থাকলেও ঋণ পাচ্ছেন না। আবার চড়া সুদে ঋণ নিয়ে গুনতে হচ্ছে লোকসান। এ খাতে সিঙ্গেল ডিজিট ঋণসুবিধা না হলে বিপর্যয়ের আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। সংকট উত্তরণে জেলা পর্যায়ে বিশেষ ঋণসুবিধা চালুর দাবি জানিয়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি, বাংলাদেশ (নাসিব) সভাপতি নুরুল গনি শোভন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বলে অনেক তহবিল আছে। কিন্তু সেই অর্থ পওয়া যায় না। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য প্রয়োজন সিঙ্গেল ডিজিট ঋণসুবিধা। এ সুবিধা প্রদানের নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীও দিয়েছেন। কিন্তু তা এখনো কার্যকর হয়নি। ভবিষ্যতে এটা হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছি। সিঙ্গেল ডিজিট ঋণসুবিধা না পেলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পথে বসে যাবেন। পাশাপাশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য জেলা পর্যায়ে বিশেষ ঋণসুবিধা চালু করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে ওয়ান স্টপ সুবিধা।’

এসএমই ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি আলী জামান বলেন, ‘দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ভালো নেই। সবার ব্যবসায় মন্দা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারছেন না। প্রত্যাশিত বিক্রিও হয় না। ফলে তাদের গুনতে হয় লোকসান। এভাবেই হারিয়ে যান স্বল্প পুঁজির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।’

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতকে আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে অর্থায়নের ক্ষেত্রে এ শিল্পের সংজ্ঞা পরিবর্তন করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রাম বিভাগ গত বছর ৫ সেপ্টেম্বর এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো প্রজ্ঞাপনে বলা হয়,  কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি এই চার ধরনের প্রতিষ্ঠানকে এসএমই শিল্প বলা হয়েছে। মাঝারি খাতের উদ্যোক্তারা উৎপাদনশীল শিল্পের জন্য সর্বোচ্চ ৭৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। মাঝারি উদ্যোক্তারা সেবা খাতে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত এসএমই ঋণ নিতে পারবেন। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা উৎপাদনশীল খাতের জন্য ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। তবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সেবা ও ব্যবসার জন্য ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, কুটির শিল্পের উদ্যোক্তারা উৎপাদনশীল খাতে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। মাইক্রো উদ্যোক্তারা উৎপাদনশীল খাতের জন্য ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। তবে মাইক্রো উদ্যোক্তারা সেবা খাতে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। এ খাতের উদ্যোক্তারা ব্যবসার জন্য ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। তথ্যমতে, গ্রামীণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে ঋণ দিচ্ছে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ৫ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে পিকেএসএফ। সংস্থাটি ওই অর্থ ঋণ হিসেবে গ্রামের ৪০ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে দিচ্ছে, যার ৭০ শতাংশই হবেন নারী। ক্ষুদ্র উদ্যোগকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে পিকেএসএফ।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর