বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

শূন্য হাতে ফিরলেন আরও ১৩২ হতভাগা

এক সপ্তাহে ফিরলেন ৪০ নারীসহ ৭৬৭ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন বছরের শুরুতে এক সপ্তাহে সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন ৪০ নারীসহ ৭৬৭ জন বাংলাদেশি। গত মঙ্গলবার রাতে দেশটি থেকে ফিরেছেন পাঁচ নারীসহ ১৩২ জন। তাদের অধিকাংশই দেশে এসেছেন শূন্য হাতে। কর্মস্থলের পোশাক পরে নেমেছেন দেশের মাটিতে। সেই পোশাকে লেগে আছে কালি ও রঙের দাগ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টা ২০ মিনিটে ও রাত দেড়টায় সৌদি এয়ারলাইনসের এসভি  ৮০৪ ও এসভি ৮০২ দুটি বিমানযোগে তারা দেশে ফেরেন। অধিকাংশই ছিলেন ক্ষুধার্ত। পকেটে ছিল না কোনো অর্থকড়ি। ফেরত আসাদের মাঝে প্রবাসী কল্যাণ ডেক্সের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছাতে জরুরি সহায়তা দেওয়া হয়। ফেরত আসা নুর বেগম (৪০) জানান, সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা আনতে পরিবার-পরিজন ছেড়ে গত বছরের এপ্রিল মাসে তিনি সৌদি আরব যান। কিন্তু নিয়োগকর্তা ঠিকমতো খাবার ও বেতন দিতেন না। বেতন চাইতে গেলে নির্মম নির্যাতন চালাতেন। নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের সেইফ হোমে আশ্রয় নেন। একই পরিস্থিতির শিকার হয়ে একই সঙ্গে দেশে ফিরেছেন যশোরের খাদিজা বেগম, নারায়ণগঞ্জের সেফালী বেগম, ঝিনাইদহের শিল্পী খাতুন ও ঢাকার সুবর্ণা বেগম। ১৬ দিন ডিপোর্টেশন ক্যাম্পে থেকে দেশে ফেরা রাজবাড়ীর রউছ শেখ জানান, মাত্র এক বছর পূর্বে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। কর্মস্থল থেকে রুমে ফেরার পথে পুলিশ আটক করলে তিনি আকামা প্রদান করেন পুলিশকে। কিন্তু তাতে সমাধান হয়নি। নিয়োগকর্তাকে ফোন করলে তিনি দায়িত্ব নেননি। পরে তাকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দেশে ফেরা অনেক যুবকের অভিযোগ, আকামা তৈরির জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকা দিলেও কফিল আকামা তৈরি করে দেয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর কফিলকে ফোন করলে কফিল দায়-দায়িত্ব না নিয়ে উল্টো ভিসা বাতিল করে দেশে পাঠিয়ে দিতে বলেন। এর আগেও যারা ফিরেছেন তাদেরও অধিকাংশের অভিযোগ ছিল এমনই। ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, নতুন বছরের শুরুতে সাত দিনে ফিরলেন ৭৬৭ জন। এভাবে যেন কাউকে প্রতারিত না হতে হয়, যে কাজে গিয়েছেন সেই কাজই যেন পান এবং খরচের টাকাটা তুলে ভাগ্য ফেরাতে পারেন  সেটা নিশ্চিত করতে হবে রাষ্ট্র ও দূতাবাসকে। এক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্সিকেই সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর