শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চ শুরু হবে যমুনায় রেলসেতুর নির্মাণ কাজ : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, দেশের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করতে যমুনা নদীর ওপর ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু’র কাজ শুরু হতে যাচ্ছে চলতি বছরের ১৭ মার্চ। এ সংক্রান্ত একটি সংশোধিত ক্রয় প্রস্তাব গতকাল পার্চেজ কমিটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। এটিসহ মোট ৯টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। 

এর জন্য ব্যয় হবে ১৪ হাজার ১১ কোটি ৮০ লাখ ৪১ হাজার ৮৫০ টাকা। এর মধ্যে ১২ হাজার ৯৫০ কোটি ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৬৭ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণে।

বৈঠক শেষে অনুমোদিত প্রকল্পের বিভিন্ন দিক সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ হচ্ছে। এটি বর্তমান সরকারের যোগাযোগব্যবস্থায় আরও একটি নতুন মাইলফলক হবে। দুটি প্যাকেজে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১২ হাজার ৯৫০ কোটি ৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। প্রকল্পে জাইকা আর্থিক সহায়তা দেবে। প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে যমুনা নদীর ওপর ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু’ নির্মাণে ২০১৬ সালে প্রকল্প অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। তখন খরচ প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। তিনি বলেন, ‘আজকে ব্যয় বাড়ার যে অনুমোদন দিয়েছি সেটা শর্তসাপেক্ষে। এ প্রকল্পটি আবার একনেকে যাবে, আবার ডিপিপি করতে হবে। নতুন ডিপিপির ভিত্তিতে কাজটি এগিয়ে যাবে। একনেকে আবার অনুমোদনের পর ক্রয় কমিটিতে যেন আবার আসতে না হয় সেজন্য আজকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জাপানভিত্তিক দুই প্রতিষ্ঠান ডব্লিউডি-১ ওটিজে জয়েন্ট ভেঞ্চার এবং ডব্লিউডি-২ প্যাকেজে আইএইচআই এসএমসিসি জয়েন্ট ভেঞ্চার সর্বনিম্ন দাতা হিসেবে বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।’

প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কাজে গতি আনতে চাই, এজন্য পদ্ধতি সহজ করতে হবে। আজকে যদি অনুমোদন না দিয়ে ফেরত দিয়ে দিতাম, তাহলে আবার একনেকে নিতে হতো। একনেক অনুমোদন দিলে আবার ক্রয় কমিটিতে আনতে হতো। এ প্রকল্প একনেক প্রথমে অনুমোদন দিয়েছে। অনেক ব্যয় বৃিদ্ধ হয়েছে, তাই আবার একনেকে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর এটা দেখা উচিত, দেখে যদি উনি অনুমোদন দেন ওকে। একনেক অনুমোদন না দিলে হবে না। ব্যয় বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজের পরিমাণ বেড়েছে। তবে কী ধরনের কাজ বেড়েছে সেটা তিনি বলেননি। এ বিষয়ে তিনি জানান, এটা একনেকেই আলোচনা হওয়া ভালো। ব্যয় বৃদ্ধির পুরো অর্থ জাইকা দেবে। দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে আগামী পাঁচ বছর প্রান্তিক পরিবারগুলোকে নিবেদন করতে চায় সরকার বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বলেন, আগামীতে দেশকে কারা নেতৃত্ব দেবে তাদের প্রান্তিক পরিবার থেকে তুলে আনা হবে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিজনেস পত্রিকা ‘দ্য ব্যাংকার’ কর্তৃক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে বিশ্বের সেরা অর্থমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার অর্জনকে পুরো জাতির অর্জন বলে অবহিত করেছেন তিনি। গতকাল সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যেসব সম্পদ এখনো ব্যবহার করতে পারিনি সেগুলো ব্যবহার করতে পারলে আমাদের প্রবৃদ্ধি আরও ভালো ও সবার জন্য আকর্ষণীয় হবে। যেটাকে আমরা বলি ইনক্লুসিভ গ্রোথ। আমরা সে কাজগুলো করার জন্য আগামী ৫ বছর প্রত্যেকটি প্রান্তিত পরিবারকে নিবেদন করব। প্রান্তিক পরিবারগুলো হবে আমাদের অগ্রাধিকার। এখন রাস্তাঘাট যে রকম অগ্রাধিকার পাচ্ছে তার চেয়েও বেশি অগ্রাধিকার পাবে প্রান্তিক পরিবার।’ তিনি বরেন, ‘প্রান্তিক পরিবার থেকেই আমরা বের করে আনব আমাদের আগামীতে নেতৃত্ব কারা দেবে, শিক্ষায় শিক্ষিত কারা হবে, কীভাবে তারা দেশের উন্নয়নে সহায়তা করবে, এসব মানুষকে প্রান্তিক পরিবার থেকে তুলে আনব।’ মুস্তফা কামাল বলেন, ‘কয়েক দিন আগে আমি পুরস্কৃত হয়েছি। আসলে আমি তো পুরস্কৃত হইনি, পুরস্কৃত হয়েছে পুরো জাতি, প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের সব মানুষ, এটা সবার পুরস্কার। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে উন্নয়ন হয়েছে সব বিবেচনায় এ পুরস্কার।’ তিনি বলেন, ‘এখানে মিসম্যাচ থাকতেই পারে। তারপরও আমি মনে করি আমরা ভালো কাজ করছি, এটা আমার বিশ্বাস। বিশ্বে গত এক বছর এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট কোনোটাই বাড়েনি। গত ছয় মাসে আমাদের ৫ শতাংশের মতো এক্সপোর্ট গ্রোথ কম।’

সর্বশেষ খবর