উৎসবের ভোটে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে জয় চায় আওয়ামী লীগ। এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নেমেছে দলটি। গতকাল থেকে শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণা। ঘরে ঘরে যাওয়া শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন দলটির নেতা-কর্মীরা। ভোট কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি, বিশেষ করে নারী ভোটারদের কেন্দ্রে আনার উদ্যোগ রয়েছে তাদের। জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি ভোটে প্রচার-প্রচারণায় সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতা-কর্মীকে কাজে লাগাতে চায় আওয়ামী লীগ। তারা মনে করছেন, প্রচার-প্রচারণায় যারা এগিয়ে থাকবে নির্বাচনী ফসল তাদের ঘরেই যাবে। বিএনপিসহ বিরোধী পক্ষ যেন ভোটের মাঠে কোনো ধরনের অপপ্রচার চালাতে না পারে সেজন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণায় তুলে ধরা হচ্ছে উন্নয়ন। বিগত সময়ে বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন আর লুটপাটের চিত্র। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ছাড়াও সমাজের বিশিষ্টজনদের নৌকার পক্ষে প্রচারণায় মাঠে নামানোর পরিকল্পনা আছে।
দলীয় সূত্রমতে, আসন্ন সিটি নির্বাচনকে বিতর্কমুক্ত করতে চায় আওয়ামী লীগ। এ জন্য দলীয় ঐক্য, উন্নয়ন প্রচার ও প্রার্থীদের ক্লিন ইমেজকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ জন্য দলীয় মনোনয়নেও প্রার্থী পরিবর্তন আনা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় সিটি নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য তিনি দলীয় ঐক্য, উন্নয়ন প্রচারের নির্দেশ দেন। কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বসিয়ে দিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এ কারণে কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থীও কমে এসেছে।
ঢাকার মেয়র পদ ধরে রাখতে চায় দলটি। এ জন্য জয় এবং বিতর্কমুক্ত নির্বাচন চায় আওয়ামী লীগ। এ প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, এ নির্বাচনকে আমরা গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। আমরা জনগণের ভোটে জয়ী হতে চাই। এর জন্য ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইব। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন কোনোভাবেই বিতর্কিত হতে দেওয়া হবে না। বিএনপি এ নির্বাচন নিয়ে নানা রকম অপপ্রচার চালাবে। এ ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’দলের একাধিক সূত্র জানায়, সিটি নির্বাচনে প্রচারণার নতুন কৌশল হিসেবে দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও রাজধানীর কোন এলাকার কোন অঞ্চলের মানুষ বেশি থাকে সে এলাকার সম্মানী ব্যক্তি এবং দলীয় নেতা-কর্মীকে কাজে লাগানো হবে। বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে নোয়াখালী, বরিশাল, ফেনী, বিক্রমপুর এলাকার ভোটার হিসাব করে ওই এলাকার জনপ্রিয় ব্যক্তি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, অথবা সরাসরি রাজনীতিতে জড়িত নন, কিন্তু জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন ব্যক্তিকেও ভোটের মাঠে কাজে লাগাবে আওয়ামী লীগ।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, সিটি নির্বাচন মামুলি বিষয় নয়, এটা রাজনৈতিক যুদ্ধ হিসেবে আমরা নিয়েছি। যদিও বিএনপি ইতিমধ্যে পরাজয়বরণ করতে শুরু করেছে। ভোটারদের কাছে ভোট না চেয়ে, ভোটের আগেই কারচুপির অভিযোগ তুলছে। ইভিএমের বিরোধিতা করছে। কিন্তু আমরা প্রতিপক্ষকে দুর্বল ভাবব না। তাদের সম্মুখে থেকেই ভোটের মাঠে মোকাবিলা করব। আমরা বিজয়ী হবই।