শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনা

ব্লু ইকোনমি হচ্ছে সমুদ্রসম্পদনির্ভর অর্থনীতি। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রয়েছে এই ব্ল -ইকোনমির অপার সম্ভাবনা। বহু বছর ধরে এ অঞ্চলের মানুষ সমুদ্র ও উপকূলবর্তী মোহনা থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের নানা কৌশলে অভ্যস্ত।

গবেষকদের মতে, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়ানো গেলে সাগরের বিশাল জলরাশি ও এর তলদেশের সম্পদ কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। এরই মধ্যে প্রাথমিক অনুসন্ধানে বঙ্গোপসাগরের তিনটি বৃহৎ মৎস্য আহরণ অঞ্চলের সন্ধান মিলেছে। জানা যায়, টেকসই ব্লু ইকোনমিবিষয়ক গবেষণায় এরই মধ্যে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেরিটাইম রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইএমআরএডি) ও খুলনা        বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সমুদ্রবিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণা, সামুদ্রিক সম্পদ অনুসন্ধান, আহরণসহ আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কাজ করবে। এদিকে ২৪ ডিসেম্বর খুলনায় এ-বিষয়ক সেমিনারে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে গবেষণা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এওসেডের নির্বাহী পরিচালক শামিম আরফিন বলেন, ‘দেশের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার সমুদ্রসীমাকে ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখছেন গবেষক ও অর্থনীতিবিদরা। গভীর সমুদ্রে রয়েছে মৎস্য আহরণের বিপুল সম্ভাবনা। সেইসঙ্গে সামুদ্রিক উদ্ভিদ ও প্রাণী-শৈবাল, তেল-গ্যাস-খনিজ পদার্থের অনুসন্ধান, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, সামুদ্রিক নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ও সমুদ্রতীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্রের মাধ্যমে অর্থনীতি বহুমাত্রিকতা পাবে।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণাঞ্চলের ৬ হাজার ২০০ বর্গ কিলোমিটার, সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডের ৩ হাজার ৮০০ বর্গ কিলোমিটার ও দক্ষিণের দক্ষিণ মৎস্য ক্ষেত্রে প্রায় ২ হাজার ৫৩৮ কিলোমিটার এলাকায় বিদেশে রপ্তানিযোগ্য দামি মাছ পাওয়া যাবে।’ তবে এর সুফল পেতে আরও গবেষণা, কার্যকর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কৌশল প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন গবেষকরা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্টি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. ওয়াসিউল ইসলাম বলেন, ‘টেকসই ব্লু ইকোনমির ব্যবহার, ব্যবস্থাপনা ও বিকাশে বড় ধরনের গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের কী পরিমাণ সামুদ্রিক সম্পদ রয়েছে তা গবেষণা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানা প্রয়োজন। বিমরাডের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকের আওতায় কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে; যার মাধ্যমে সমুদ্রবিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণা, সমুদ্রসম্পদ অনুসন্ধান, আহরণসহ আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কাজ করা যাবে।’ এদিকে ব্লু ইকোনমির মাধ্যমে বিশাল কর্মসংস্থানের সম্ভাবনারও কথা বলেছেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ-উজ্জামান। তিনি বিশাল এ কর্মযজ্ঞে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, কার্যকর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কৌশল প্রণয়নের দাবি জানান।

সর্বশেষ খবর