রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
দম্পতি গ্রেফতার শিল্পপতিকে খুঁজছে সিআইডি

সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি করেই বিত্তশালী

ঢাকায় তিনটি বহুতল ভবন, আছে ফ্ল্যাট প্লট

নিজস্ব প্রতিবেদক

সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি করেই বিত্তশালী

সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এক দম্পতি। এরা হলেন এইচ এম এ বারিক ওরফে বাদল ওরফে বাদল হাওলাদার ওরফে মোস্তাক আহমেদ এবং তার স্ত্রী মরশিদা আফরীন। ৭ জানুয়ারি খুলনার খালিশপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর পরই বেরিয়ে আসে সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি করে তাদের কোটিপতি হওয়ার গল্প। সিআইডি বলছে, সঞ্চয়পত্র জালিয়াত চক্রের সদস্যসংখ্যা ২১। এ জালিয়াত চক্রের মূল হোতা একজন শিল্পপতি। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

গতকাল সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত এসপি মো. ফারুক হোসেন বলেন, গ্রেফতার ওই দম্পতির সম্পদের মধ্যে রয়েছে গুলশান-২ নম্বরে ১০০ কোটি টাকা মূল্যের একটি নয়তলা বাড়ি, উত্তরায় ১০০ কোটি টাকা মূল্যের একটি ছয়তলা বাড়ি, উত্তরখানে কোটি টাকা মূল্যের একটি দোতলা বাড়ি, বিলাসবহুল গাড়ি, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দুই কোটি টাকা, বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট ও জমি। ভুয়া সঞ্চয়পত্র দিয়ে ২১টি ব্যাংক লোনের মাধ্যমে ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওই দম্পতি গ্রেফতার হন।

সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, ২০০৪ সাল থেকে তারা সঞ্চয়পত্র জালিয়াতির পেশা শুরু করেন। ওই বছর ভুয়া সঞ্চয়পত্র তৈরি করে এর বিপরীতে এবি ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় ২০০৪ সালে একটি মামলা করে এবি ব্যাংক। তখন থেকেই পলাতক ছিলেন মোস্তাক। তার বিরুদ্ধে ওই মামলায় সাজা হওয়ার পর তিনি দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ভারতে পালিয়ে ছিলেন।

২০১১ সালে দেশে এসে আবার জালিয়াতি  শুরু করেন। গ্রেফতার মোস্তাককে ১৬ বছর ধরে খুঁজছিল পুলিশ। ওই মামলায় এবি ব্যাংকের ধানমন্ডি ব্রাঞ্চের তৎকালীন ব্যবস্থাপক আসিরুল হক গ্রেফতার হন। ২০০৬ সালে তিনি তিন মাস কারা ভোগ করেন। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে হƒদরোগে মারা যান বলে জানা গেছে। তবে এর সঙ্গে ব্যাংকের আর কোনো কর্মকর্তা জড়িত আছেন কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এই সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, ভুয়া সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে কোটি টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদক মোস্তাক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ২০০৪, ২০১১ ও ২০১৬ সালে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরা পশ্চিম ও মোহাম্মদপুর থানায় সাতটি মামলা করে। মামলাগুলো সিআইডি তদন্ত করছে। চক্রটির মূল হোতা একজন শিল্পপতি। তার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে ব্যবসা ছিল। ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ করে ব্যবসা করে তিনি শিল্পপতি হয়েছেন। তার অন্তত তিনটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

সর্বশেষ খবর