বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ধর্ষকরা বেপরোয়া সারা দেশে

কামরাঙ্গীরচরে বাবাই তুলে দিলেন ধর্ষকের হাতে । মৌলভীবাজারে কলেজছাত্রীসহ দুজনকে ধর্ষণ । আশুলিয়ায় বাসাভাড়া দিতে না পারায় গণধর্ষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক ও মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে দোকান মালিক আবুলের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা ধার নেন ওই দোকানের এক কর্মচারী। পরে ঋণের ওই টাকা পরিশোধ করতে না পেরে মালিক আবুলের কুপ্রস্তাবে নিজের শিশু কন্যাকে (১৩) বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করার সুযোগ করে দেন বাবা। সর্বশেষ ১১ জানুয়ারি ওই শিশুকে ধর্ষণ করে আবুল। ওই শিশু পাশের বাসার এক মহিলার কাছে ধর্ষণের ঘটনা খুলে বলে বাঁচার আকুতি জানায়। মঙ্গলবার বিকালে ওই প্রতিবেশী ৯৯৯-এ ফোন দিলে   ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। রাতেই শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর শিশুটির বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গতকাল তাকে আদালতে পাঠানো হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলাম কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই শেখ মো. মোর্শেদ জানান, ধর্ষণের শিকার শিশু বাবার সঙ্গে কামরাঙ্গীরচর বেটারীঘাট এলাকায় থাকে। মা প্রবাসী। প্রায় এক বছর আগে থেকে দোকান মালিক আবুল ওই শিশুর বাবার কাছে ৬ হাজার টাকা পায়। এক বছর আগে থেকেই তাগাদা দিলেও টাকা দিতে পারেননি শিশুর বাবা।

পরে আবুল তার মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার কুপ্রস্তাব দেয়। এর পর থেকেই ওই শিশুর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করছিল আবুল। একপর্যায়ে শিশুকে রাজি করায় আবুল। এর পর দীর্ঘদিন বাবার সহায়তায় শিশুর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে আবুল। এ ঘটনায় ওই প্রতিবেশী বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা করে। এর পরই শিশুটির বাবাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর ওই বাবাই কৌশলে দোকান মালিক আবুলকে ফোন করে পালিয়ে যেতে বলে। আবুলকে ধরতে অভিযান চলছে।

কলেজছাত্রীসহ দুজনকে ধর্ষণ মৌলভীবাজারে :  মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় এক কলেজছাত্রীসহ দুই তরুণী গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করেছে। থানায় লিখিত অভিযোগসূত্র থেকে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী দুপুরে কলেজ শেষে বাড়ি ফেরার জন্য বান্ধবীকে নিয়ে শহরের প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় ওঠেন। এ সময় অটোরিকশায় ছিলেন চার যুবক। শহরতলীর মোস্তফাপুর ইউনিয়নের রঘুনন্দনপুর এলাকায় এম সাইফুর রহমান স্টেডিয়াম এলাকায় যাওয়ার পর চার যুবক তাদের জোর করে একটি নির্জন টিলায় নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণের শিকার দুই তরুণী পুলিশকে ফোন করলে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।

রাতে কলেজছাত্রী বাদী হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় সিএনজি চালকসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান তিন আসামিকে আটক করেছে। তারা হলেন মোস্তফাপুর ইউনিয়নের উত্তর জগন্নাথপুর এলাকার ইসমাইল মিয়ার ছেলে মুন্না মিয়া, হাসিব উদ্দিনের ছেলে আকাশ মিয়া ও ছুরফ মিয়ার ছেলে হুমায়ুন মিয়া।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, তিনজনকে আটক করা হয়েছে, আর বাকি দুই আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। ধর্ষণের শিকার দুই তরুণীর আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বাসাভাড়া দিতে না পারায় গণধর্ষণ : ঢাকার আশুলিয়ায় স্বামীকে আটকে রেখে পোশাক কারখানার এক নারী শ্রমিককে (২৪) গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে বাসা ভাড়া দিতে না পারায় তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে দাবি করে ওই নারী গতকাল একটি মামলা করেন। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়। পরে ওই নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়। সূত্র জানায়, আশুলিয়ায় একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকেন ওই নারী ও তার স্বামী। তার স্বামী পেশায় বাসচালক। আর তিনি আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে বাড়ির মালিক কালাম তাদের কাছে বাসা ভাড়ার টাকা নিতে আসেন। এ সময় কালামের সঙ্গে তিনজন ছিল। কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন না দেওয়ায় পরে বাসা ভাড়া দেবেন বলে ওই নারী বাসার মালিককে জানান। পরে কালামের সহযোগীরা ওই নারীর স্বামীকে পাশের কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। এরপর কালাম ওই নারীকে ধর্ষণ করে। পরে বাকি তিনজনও ধর্ষণ করে। আশুলিয়া থানার এসআই সেলিম রেজা জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি কালামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ খবর