রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভিড়বে জাহাজ

চট্টগ্রাম বন্দর সাশ্রয় হবে সময় কমবে ভোগান্তি

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ ভেড়ানোর (বার্থিং) পুরনো পদ্ধতির পরিবর্তে নতুন ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। জেটিতে জাহাজ ভেড়াতে ৩৪ বছরের পুরনো নিয়ম উঠে গেলে শিপিং এজেন্টদের আর বন্দর ভবনে দৈনিক বার্থিং মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতে হবে না। নতুন পদ্ধতিতে জাহাজ জেটিতে বার্থিং নিতে অনলাইনে এজেন্টদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বার্থিং পেয়ে যাবে। তবে এখনো তা পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। পূর্ণাঙ্গরূপে ডিজিটাল বার্থিং চালু হতে আরও কিছুদিন লাগবে। কারণ এখনো শিপিং এজেন্টগুলো তাদের জাহাজের সব ডাটা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়নি। ডিজিটাল বার্থিংয়ে ব্যবহৃত সফটওয়্যারে জাহাজের ডাটা ইনপুট করা শেষে নতুন এ পদ্ধতি চালু হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবহারকারীরা জানান, ডিজিটাল পদ্ধতিতে জাহাজ বার্থিং চালু হলে একদিকে সময় সাশ্রয় হবে, ভোগান্তি কমবে, অন্যদিকে আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে। এতে বন্দর জেটিতে থাকা জাহাজ ও বন্দর জলসীমায় থাকা সব জাহাজের তথ্য হালনাগাদ থাকবে। এ পদ্ধতিতে জাহাজের গড় অবস্থানও কিছুটা কমে আসবে। নতুন এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা জাহাজের তথ্য দেবেন শিপিংলাইন বা এজেন্টরা। এর পরই স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্থিংয়ের অনুমতি মিলবে। এ পদ্ধতিতে শিপিং এজেন্টদের প্রতিদিন বন্দর ভবনে বৈঠকে বসে সময় নষ্ট করে জাহাজ বার্থিং অনুমতি নিতে হবে না।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমোডর শফিউল বারি বলেন, ‘উন্নত দেশের সমুদ্রবন্দরে আগে থেকেই এ পদ্ধতি চালু রয়েছে। নতুন এ পদ্ধতিতে এখন ট্রায়াল রান বা পরীক্ষামূলক কাজ চলছে। সফটওয়্যার অপারেটিং বা অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনো ভুলত্রুটি থাকলে সংশোধন করা হচ্ছে।’ এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘জাহাজের ডিজিটাল বার্থিং পদ্ধতি পুরোপুরি চালু হতে আরও কিছুটা সময় লাগছে। এখনো দেশি-বিদেশি অনেক শিপিং এজেন্ট তাদের জাহাজের পূর্ণাঙ্গ তথ্য বা ডাটা আমাদের দেয়নি। জাহাজের ডাটা ইনপুট ছাড়া এ কাজ হবে না। সব তথ্য সফটওয়্যারে আপগ্রেড থাকলেই সে জাহাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে বার্থিং নিতে পারবে, তার আগে নয়।’

এদিকে বন্দরে ডিজিটাল অনলাইন বার্থিং মনিটরিং সিস্টেম উদ্ভাবন করায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবক নির্বাচিত হয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ। গত ৯ জানুয়ারি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আইসিটি শাখার পক্ষ থেকে এ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। আইসিটি শাখার কর্মকর্তা সৈয়দ মোহাম্মদ অলিউর রহমান জানান, ‘ডিজিটাল অনলাইন বার্থিং মনিটরিং সিস্টেমে বিদেশ থেকে বহির্নোঙরে জাহাজ আসার পর মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানাবে। এরপর ফিরতি এসএমএসে কখন, কোন বার্থে জাহাজটি ভিড়বে, বন্দরের পাইলট কখন জাহাজে উঠবেন এসব প্রয়োজনীয় তথ্য আদান-প্রদান করবে।’

সর্বশেষ খবর