শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

আগামী বছর থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২০-২১) থেকেই দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসির এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকসূত্র জানান, উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির ওপর ভিত্তি  করে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি হবে। সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম। ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য উপাচার্যদের সঙ্গে শিগগিরই ফের আলোচনা করা হবে। সমন্বিত ভর্তি পদ্ধতি সম্পর্কে ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলর ও প্রধানমন্ত্রী দফায় দফায় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার কথা বলেছেন। এ প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা হলে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর ভোগান্তি নিরসন হবে, হবে অর্থ সাশ্রয়ও। এটি অবশ্যই আশার কথা। একই সঙ্গে ভর্তিকে কেন্দ্র করে কোচিং বাণিজ্যও বন্ধ হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে মেডিকেল কলেজগুলোতেও সমন্বিত পদ্ধতির ভর্তি পদ্ধতি চালু রয়েছে। এ ছাড়া সাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত শিক্ষাবর্ষে প্রথমবারের মতো সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।

 তবে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর দফায় দফায় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার তাগিদ দিলেও কোনো গা করেননি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা। তাই এ পদ্ধতি চালু করা যায়নি। ফলে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের। ইউজিসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশে বলা হয়, গুচ্ছ পদ্ধতি না থাকায় ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে অবর্ণনীয় ভোগান্তির শিকার হন শিক্ষার্থীরা। সূত্রমতে, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে একটি কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মাধ্যমে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু এ প্রক্রিয়া আর এগোয়নি। ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীরা বলছেন, অনেক ক্ষেত্রেই এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার পরদিন অন্য বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে থাকে। একটি পরীক্ষা দিয়ে অন্য পরীক্ষার জন্য দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে একই দিন দুটি বিশ্ববিদ্যালয়েও পরীক্ষার তারিখ দেওয়া হয়। এতে বিপাকে পড়তে হয় ভর্তিচ্ছুদের। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তি প্রক্রিয়া আলাদা হওয়ায় কোচিং সেন্টারগুলোও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। আর শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিয়ে বিপাকে পড়েন তাদের অভিভাবকরা। তাই অভিভাবকরাও বলছেন, সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠান করা গেলে তাদের হয়রানি আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। সমন্বিত পদ্ধতি যাতে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা যায় এজন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

সর্বশেষ খবর