শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

একটি বাল্যবিয়ে ভণ্ডুলের কাহিনি

মাদারীপুর প্রতিনিধি

বিয়ের সব ধরনের আয়োজন সম্পন্ন। চারদিকে ধুমধাম। কলাগাছ আর রঙিন কাগজ দিয়ে বিয়ের মন্ডপ সাজানো। চারদিকে সানাইয়ের সুর। অতিথিদের পদভারে সরগরম বিয়েবাড়ি। শিশুদের আনন্দ উল্লাস। পুরোহিত হাজির। কনে সাজিয়ে বসানো হলো পিঁড়িতে। বাড়ির  লোকজনের তাড়াহুড়ো, লগ্নের সময় হয়েছে। এমন সময় বাধল বিপত্তি। উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা পুলিশ নিয়ে বিয়েবাড়ি হাজির। নিমেষে সব আনন্দ বিষাদে পরিণত হলো। কনের বয়স না হওয়ায় বিয়ে ভেঙে দিল প্রশাসন। ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের দামেরচর গ্রামে বুধবার রাত ৯টার দিকে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাহপুর ইউনিয়নের উচ্চাবাজার এলাকার অচিন্ত রায় তার মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী চম্পা রায়কে (১৫) মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা উমেদপুর এলাকার সুশান্ত রায়  গোপনে তার নানাবাড়ি পাশর্^বর্তী রাজৈর উপজেলার দামেরচর গ্রামে বসে বিয়ে দিচ্ছিলেন। এ সময় রাজৈর উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার গোপন খবরের ভিত্তিতে পুলিশ নিয়ে ওই বিয়েবাড়িতে হানা দেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কনে দৌড়ে ঘরের মধ্যে পালিয়ে থাকে। খবর পেয়ে বর বেচারা আর বিয়েবাড়িতে  পৌঁছাতে সাহস পায়নি। মাঝপথ থেকে বর সুশান্ত রায় সহযাত্রী নিয়ে মানে মানে কেটে পড়লেন। পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর কনে চম্পা রায়কে পাওয়া গেল। চম্পা রায় জানান, আমি এবার এসএসসি পরীক্ষা দেব। এ সময় আমি বিয়ে করতে চাইনি। বাবা-মা জোর করে বিয়ে দিচ্ছিল। আমি পড়াশোনা করতে চাই। রাজৈর উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান,  গোপন খবরে জানতে পারি এসএসসি পড়ুয়া এক ছাত্রীকে জোর করে তার বাবা-মা বিয়ে দিচ্ছে।

 পরে পুলিশ নিয়ে রাতে বিয়েবাড়ি গিয়ে এ বাল্যবিয়ে ভেঙে দেই এবং বাল্যবিয়ের দায়ে কনের বাবা-মাকে আটক করি। পরে মুচলেকা দেওয়ায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর