শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম চড়া সবজির বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম চড়া সবজির বাজার

বাজার দর

বাজারে পর্যাপ্ত মজুদ থাকার এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে তিন থেকে চার টাকা। মাসের ব্যবধানে বেড়েছে পাঁচ থেকে ছয় টাকা। শীতকালীন সবজির ভরা  মৌসুমেও রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে চড়া সবজির দাম। দুয়েকটি বাদে ৩০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি। দেশি নতুন পিয়াজে বাজার ছেয়ে গেলেও ১০০ টাকার নিচে মিলছে না কেজি। রসুন, আদা, এলাচ, জিরাসহ সব ধরনের মসলার দাম গত বছরের ব্যবধানে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাছের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও ঊর্ধ্বমুখী মাংসের দাম। বাজারভেদেও রয়েছে দামের ব্যাপক তারতম্য। গতকাল কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

চাল ব্যবসায়ীরা জানান, গত ১৫ দিনের ব্যবধানে তিন দফায় বেড়েছে মিনিকেট চালের দাম। প্রতি ৫০ কেজির বস্তায় বেড়েছে প্রায় ২০০ টাকা। খুচরা বাজারে কেজি প্রতি বেড়েছে চার থেকে পাঁচ টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য চালের দামও মানভেদে প্রতি বস্তায় বেড়েছে এক থেকে দেড়শ টাকা। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির বাজার দরের তালিকায়ও  দেখা  গেছে, চালের দাম বাড়ছে। সংস্থাটির তথ্যমতে, সরু চালের কেজি ৫২  থেকে ৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। নাজিরশাইল ও মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০  থেকে ৫২ টাকা। এ ছাড়া মোটা চাল (স্বর্ণা ও চায়না) বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। ডাল, আটা, তেল ও চিনির দামও মাসের ব্যবধানে বেড়েছে। টিসিবির তথ্যানুযায়ী, এক মাস আগের তুলনায় মসুর ডাল সাড়ে ৮ শতাংশ বেড়ে ৬৫-১৩০ টাকায়,  খোলা সয়াবিন তেল ৬ শতাংশ বেড়ে লিটার ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৬-৬৭ টাকায়, এক মাস আগে যা বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকায়।

এদিকে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও সবজির দাম চড়া। বাজারভেদে মাঝারি আকারের লাউ প্রতিটি ৫০-৮০ টাকায়, বাঁধাকপি ও ফুলকপি প্রতিটি ৩০-৪০ টাকায়, বড় কচু একটি ৭০-৮০ টাকায়,  বেগুন জাতভেদে প্রতি কেজি ৪০-৬০ টাকায়, কাঁচামরিচ ৬০-৭০ টাকায়, শিম ৩৫-৫০ টাকায়, শসা ৪০-৬০ টাকায়, করলা ৫০-৭০ টাকায়, পাকা টমেটো ৪০-৬০ টাকায়, গাজর ৪০-৫০ টাকায়, মুলা ২০-২৫ টাকায়, নতুন আলু ২৫-৩০ টাকায়, শালগম ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সেই তুলনায় লাল শাক, পালংশাক ও পিয়াজের কলির দাম কিছুটা সহনীয় মনে করছেন ক্রেতারা। এগুলো প্রতি আঁটি পাওয়া যাচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। লাউ ও কুমড়া শাক প্রতি আঁটি ২৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল অধিকাংশ বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। শুক্রাবাদসহ কয়েকটি বাজারে ৫৭০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অনেক সুপার শপে বিশেষ ছাড় ঘোষণা দিয়ে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে ৫৪৯ টাকায়। খাসির মাংস বাজারভেদে প্রতি কেজি ৭৮০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে। বকরির কেজি ৭২০ থেকে ৮০০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, বিয়ের মৌসুম হওয়ায় বাড়তি চাহিদার কারণে গরু ও খাসির মাংসের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এ ছাড়া পাকিস্তানি কক প্রতি কেজি ২৩০ টাকা, দেশি ৪০০-৪৫০ টাকা, ব্রয়লার ১২০-১২৫ টাকা এবং হাঁসের পিস আকারভেদে ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

দেশি নতুন পিয়াজ বাজারে উঠলেও এখনো ১০০ টাকার নিচে নামেনি কেজি। বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকায়। আমদানি পিয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা। আমদানি করা রসুন প্রতি  কেজি ১৩০-১৬০ টাকা এবং দেশি রসুন ১৪০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবির হিসাবে, বছরের ব্যবধানে দেশি  পিয়াজের দাম ৩১১ শতাংশ, আমদানি করা  পিয়াজের দাম ২১১ শতাংশ এবং রসুনের দাম ৮৭ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া শুকনো মরিচের দাম মাসের ব্যবধানে ১৪ শতাংশ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০-৩৫০ টাকা কেজি। আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৫০ টাকা।

সর্বশেষ খবর