আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী। অধ্যাপনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। দেশের কাব্যজগতে নবাগত এই কবি সস্প্রতি প্রকাশ করেছেন তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘নক্ষত্র নিভে যায়’। অকালপ্রয়াত পত্নী সিতারা পারভীনকে উৎসর্গীকৃত কাব্যগ্রন্থটির প্রকাশনা উৎসব গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, শিক্ষাবিদ-কথাশিল্পী অধ্যাপক সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম ও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ। কবিতা আবৃত্তি করে শোনান কবির সহোদর সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিকতা বিভাগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দেশের প্রথিতযথা গণমাধ্যমকর্মীরা। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলীকে আমি আমার সহকর্মী হিসেবেই জানতাম। কিন্তু “নক্ষত্র নিভে যায়” হাতে আসার পর তাকে কবি হিসেবে প্রথম জানলাম। বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম, তাতে অপরিণতির কোনো ছাপ নেই। এর একটি ব্যাখ্যা তার ভূমিকাতেই আছে। তিনি বলেছেন “আশৈশব আমি কবিতার অনুরাগী। কবিতাকে আমি আমার মর্মে গ্রহণ করেছি”।’ অকালপ্রয়াত কবিপত্নী সিতারা পারভীনকে স্মরণ করে সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘বইটি উৎসর্গ করে লেখা কবিতায় কবি বলেছেন, “সারাটি রাত্রি তারাটির সাথে তারাটির কথা হয়”। এর থেকে বোঝা যায়, বইটির প্রধান বিষয় হলো নিমগ্নতা। এ ছাড়া এতে তিনি কখনো ব্যক্তিগত চিন্তা, দেশ নিয়ে ভাবনা নিয়েই বলেছেন। এর দুটি অংশের প্রথমটিতে আছে ব্যক্তিগত অনুভূতির কবিতা। আর পরের অংশে শোক ও দ্রোহের কবিতা। সেখানে দেশ নিয়ে, উন্নয়ন অসমতা নিয়ে অনেক ক্ষোভ তার কণ্ঠে ঝরে পড়েছে।’ মান্না দের ওপর লেখা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন : উপমহাদেশের অন্যতম কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী মান্না দের জীবনবোধ-চিন্তা-চেতনা নিয়ে জীবনীমূলক গ্রন্থ ‘মান্না দে : শিল্পীর চেয়েও যিনি বড় মানুষ’ রচনা করেছেন লেখক শরাফত আলী। গতকাল বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটমন্ডল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কবি কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। এ ছাড়া কলকাতার মান্না দে সংগীত একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. গৌতম রায়, লোকাল গভর্নমেন্ট সাপোর্ট স্পেশালিস্ট আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য দেন লেখক শরাফত আলী।
কবি কামাল চৌধুরী বলেন, ‘গান শোনার সময় যার গান ভালো লাগে, আমরা তাকেই বড় শিল্পী বানিয়ে দিই। সাধারণ মানুষের কাছে বড় শিল্পী তিনিই, যিনি অন্য শিল্পীকে প্রভাবিত করতে পারেন এবং অনুরণন সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিতে পারেন। মান্না দে এমনই একজন শিল্পী ছিলেন।’
ড. গৌতম রায় বলেন, ‘আমরা মান্না দে বলতে শুধু তাঁর গান বুঝি। কিন্তু এর বাইরে তিনি একজন চমৎকার মানুষ ছিলেন। তাঁর মধ্যে কোনো অহমবোধ ছিল না। তাঁকে আত্মজীবনী লেখার কথা বলা হলে তিনি হেসে উড়িয়ে দিতেন। ঘটনাচক্রে তাঁর সাহচর্য পাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। আগামীতে যারা সংগীতাঙ্গনে আসবেন, তারা যেন মান্না দের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন।’