মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

নাগরিকত্ব আইনবিরোধী প্রস্তাব পাস পশ্চিমবঙ্গেও

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারত সরকারের বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (ক্যা) বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই নিজেদের রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব পাস করেছে কেরল, পাঞ্জাব ও রাজস্থান। এবার চতুর্থ রাজ্য হিসেবে সেই পথে হাঁটল পশ্চিমবঙ্গ। সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ক্যা-বিরোধী প্রস্তাব পাস করেছে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার। এই উদ্দেশ্যে এদিন বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়। দুপুর ২টা নাগাদ প্রস্তাবটি পেশ করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই এ প্রস্তাব পেশ করেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি পার্থ চট্টোপাধ্যায় ক্যা-বিরোধী প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাসের জন্য বিরোধীদের কাছে আর্জি জানান। তাকে সমর্থন জানায় বিরোধী দল কংগ্রেস ও বাম বিধায়করা।

বিতর্কিত নতুন নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই আইন সংবিধান ও মানবিকতা বিরোধী। আমরা চাই কেন্দ্রীয় সরকার অবিলম্বে এই আইন প্রত্যাহার করুক। আমরা চাই ন্যাশনাল পপুলেশন অব রেজিস্টার (এনপিআর) ও প্রত্যাহার করা হোক।’ এদিন ফের একবার তিনি বলেন, ‘বাংলায় আমরা সিএএ, এনআরসি, এনপিআর করতে দেব না।

 আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’ তার অভিমত ‘এটা কেবলমাত্র সংখ্যালঘুদের আন্দোলনই নয়, সামনে থেকে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ায় আমি হিন্দু ভাইদেরও ধন্যবাদ জানাব।’ দেশের স্বার্থে কংগ্রেস ও বামদলগুলোকেও সব মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে রেখে একত্রে লড়াই করার আবেদন জানানোর পাশাপাশি রাজ্য সরকারের অযৌক্তিক সমালোচনা না করারও আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী। 

মমতা আরও জানান, ‘সন্দেহজনক নাগরিক, ডিটেনশন সেন্টার...এসব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তারা যেভাবে এগোচ্ছে তাতে এদেশে জন্ম না নেওয়াটাই মনে হয় ভালো ছিল। আজ দেশের মানুষ ভীত, সন্ত্রস্ত এই কারণে যে, কোনো একদিন না তাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়।’ বিজেপিকে পাকিস্তানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসাবে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘তারা (বিজেপি) সবসময় পাকিস্তান নিয়ে কথা বলেন, অথচ নিজের দেশ ভারত সম্পর্কে কম কথা বলেন।’ সিএএ এবং প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) এর বিরোধিতায় আসাম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশসহ ভারতের একাধিক রাজ্যে গত ডিসেম্বরে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কোথাও কোথাও প্রতিবাদের নামে আন্দোলন সহিংসতা চেহারা নেয়। সংঘর্ষে গোটা দেশে ২৫ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। যদিও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন রাজ্য বিধানসভায় এই আইন বিরোধী প্রস্তাব পাস হলেও এর কোনো সাংবিধানিক বৈধতা নেই। কারণ সংবিধান অনুযায়ী এই বিষয়টি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন।

সর্বশেষ খবর