সম্পদের হিসাব বিবরণী দুদকে জমা না দেওয়ার মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনকে তিন বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি আসামিকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ওই টাকা ৩০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রের অনুকূলে জমা দিতে বলা হয়েছে। গতকাল ঢাকার ৮ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শামীম আহাম্মাদ এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার আগে আসামি রফিকুল আমীনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হাসান জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের জানান, রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে এ মামলার রায় ঘোষণা করেছে আদালত। এখন নিয়ম অনুযায়ী কারাদন্ড থেকে আসামির হাজতবাসকালীন সময় বাদ যাবে। ফলে ২০১২ সাল থেকে কারাগারে থাকা রফিকুল আমীনকে এ মামলায় আর সাজা খাটতে হবে না। তবে মুদ্রা পাচারের আরও দুটি মামলায় গ্রেফতার থাকায় আপাতত তার মুক্তি মিলছে না। তবে আসামি রফিকুল আমীনের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী জানান, রফিকুল আমীন কারাগারে যান ২০১২ সালের ১২ অক্টোবর। কারান্তরীণ থাকাকালে ২০১৬ সালে তাকে সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিলের নোটিস দেয় দুদক। সে কারণে তিনি জবাব দিতে পারেননি। এ ছাড়া এ মামলায় সাজা আর খাটতে না হলেও এই রায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীন এবং ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে কলাবাগান থানায় আলাদা দুটি মামলা করে দুদক। ওই দুই মামলার তদন্ত চলার মধ্যেই প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে রফিকুল আমীনের ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ ১৮ কোটি ২ লাখ ২৯ হাজার ৩২৩ টাকার সম্পদের হিসাব চেয়ে ২০১৬ সালের ১৬ জুন নোটিস দেয় দুদক। নোটিসে সাত দিনের মধ্যে তাকে তথ্য বিবরণী জমা দিতে বলা হয়। তখন কারাবন্দী রফিকুল আমীন সময়ের আবেদন করলে তাকে আরও সাত দিন সময় দেওয়া হয়। এরপরও সম্পদের তথ্য বিবরণী না দেওয়ায় ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রমনা থানায় এ মামলা করে দুদক। এরপর ঘটনার তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৬ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরের বছরের ১২ মার্চ অভিযোগ গঠন করে এ মামলায় রফিকুল আমীনের বিচার শুরু করে আদালত।