বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বৃক্ষচারী বিরল পাখি বেগুনি পাপিয়া

আলম শাইন

বৃক্ষচারী বিরল পাখি বেগুনি পাপিয়া

‘বেগুনি পাপিয়া’ বিরল দর্শন বৃক্ষচারী পাখি। বাংলায় পাখির নাম বেগুনি পাপিয়া হলেও ইংরেজি নাম, ‘ভায়োলেট কুক্কু (Violet Cuckoo)’। বৈজ্ঞানিক নাম, ‘Chrysococcyx  xanthorhynchus’। স্থানীয় প্রজাতির হলেও এদের যত্রতত্র দেখা যায় না। কালেভদ্রে দেখা যায় সিলেট অঞ্চলের চিরসবুজ বনে। বাংলাদেশ ছাড়াও এদের বিস্তৃতি পূর্ব ভারত, ভুটান, দক্ষিণ চীন, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে। অন্য প্রজাতির পাপিয়াদের চেয়ে এদের চালচলন ভিন্ন। সাধারণত জোড়ায় জোড়ায় বা ছোট দলে বিচরণ করে এরা। অন্য প্রজাতির পাপিয়াদের একাকী বিচরণ করতে দেখা যায়। ‘বেগুনি পাপিয়া’ গাছের উচ্চ শিখরে ঘাপটি মেরে বসে থাকে শিকারের প্রতীক্ষায়। শিকার ধরে নির্ধারিত স্থানে এসে পুনরায় বসে থাকে। এভাবে বারবার উড়াউড়ি করেও এরা ক্লান্ত হয় না। প্রজনন মৌসুমে এদের হাঁকডাক বেড়ে যায়। ‘চি-উইক চি-উইক ’ সুরে সারা দিন গান গায়। পূর্ণিমা রাতেও এদের গান শোনা যায় তখন। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৭ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির বর্ণে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ পাখির মাথা, ঘাড়, গলা ও বুক বেগুনি বর্ণের। পেটের দিকটায় সাদা-বেগুনি মিশ্রিত ডোরা দাগ। ডানা পালিশ করা বেগুনি। লেজের ডগা সাদাটে। ঠোঁট উজ্জ্বল কমলা। স্ত্রী পাখির পিঠ সবুজাভ ব্রোঞ্জ। লেজ সবুজাভ, ডগা সাদাটে। বুকের নিচের দিকে সাদা-সবুজাভ-ব্রোঞ্জের ডোরা। ঠোঁট হালকা হলুদ। স্ত্রী-পুরুষ পাখির উভয়ের চোখের বলয় লাল। পা ও পায়ের পাতা বাদামি সবুজ। এদের প্রধান খাবার কীটপতঙ্গ। শুঁয়োপোকার প্রতি আসক্তি বেশি। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন। নিজেরা বাসা বানাতে অক্ষম। পরের বাসায় ডিম পাড়ে। বিশেষ করে মৌটুসি পাখির বাসা ওদের বেশি পছন্দ। ডিমের সংখ্যা ১-২টি। ধাত্রী মাতার আশ্রয়েই শাবক লালিত হয়।

সর্বশেষ খবর