বরিশালের বাকেরগঞ্জে চিকিৎসার নামে এক ব্যক্তিকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জিনের আছড় ছাড়ানোর নামে গত শুক্রবার দুই দফা তাকে পানিতে চুবিয়ে লুকিয়ে রাখার পর ওই রাতেই তার লাশ পাশের বাগানে ফেলে রাখে তারা।
এ ঘটনার পর অভিযুক্ত রিয়াজ ফকির ও তার সহযোগীরা আত্মগোপন করলেও রিয়াজের বোন অনিকা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে। মৃতের নাম কালাম মৃধা (৪৮)। তিনি পটুয়াখালীর বদরপুর ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের মৃত তুজম্বর মৃধার ছেলে। নিহত কালামের স্ত্রী পারভীন বেগম (৩০) জানান, সাম্প্রতিক তার স্বামী অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। জিনে ধরেছে ধারণা করে এর আছড় ছাড়াতে স্বামীকে নিয়ে গত শুক্রবার সকালে বাকেরগঞ্জ উপজেলার আউলিয়াপুর গ্রামের রিয়াজ ফকিরের কাছে নিয়ে যান। ওই দিন সকাল ১০টায় এবং বিকাল ৪টায় রিয়াজ ফকির তার বাড়ির পুকুরে দুই দফা তার স্বামীকে চুবায় এবং লাঠি দিয়ে মারধর করে। এতে কালাম মৃধা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রিয়াজ ফকির একটি ঘরে আটকে রাখে। ওই রাতে তার স্বামীকে রিয়াজ ফকির তার বোন অনিকার বাসায় লুকিয়ে রাখে এবং তার স্ত্রীকে স্বামী সুস্থ আছে বলে জানায়। রাতেই কালামের মৃত্যু হলে রিয়াজ ফকির বাড়ির পাশে একটি বাগানে নিয়ে তার লাশ ফেলে রাখে। সকালে প্রতিবেশীরা বাগানে একটি লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরণ করে। স্থানীয়রা জানান, রিয়াজ ফকির ও চাচাতো ভাই অসীম ফকির গাউছে আজম হযরত কালু শাহ্ দেওয়ান মাজার শরিফের অন্তরালে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী বরিশাল সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার সাঈদ জানান, কালামকে পুকুরের পানিতে চুবিয়ে এবং শারীরিক নির্যাতন করে হত্যার পর তার লাশ বাগানে ফেলে রাখে কথিত ফকিররা। ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত রিয়াজ ফকির ও সহযোগীরা পালিয়ে গেলেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার বোন অনিকা বেগমকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত পলাতকদের আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার সাঈদ।
