রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

লবণসহিষ্ণু সবজি চাষে কৃষকের আগ্রহ

বরগুনা প্রতিনিধি

লবণসহিষ্ণু সবজি চাষে কৃষকের আগ্রহ

বরগুনায় লবণাক্ততার কারণে যে জমি বছরের পর বছর অনাবাদি রাখতে কৃষক বাধ্য হতো সেই জমিতে এখন উৎপাদন হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। অনাবাদি এ লবণাক্ত জমিতে  বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষক এখন উৎপাদন করছে রবি মৌসুমে বাঁধাকপি, গাজর, রেড বিট, ওলকপি, গোল আলু। খরা মৌসুমে উৎপাদন করছে ঢেঁড়স, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, পুঁইশাক, চিচিংগাসহ পুষ্টিমানের সবজি। সমুদ্র উপকূলে কৃষকের অন্যতম সমস্যা জমিতে লবণাক্ততা। বিশেষ করে নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত বরগুনাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে শুকনা মৌসুমে সেচের জন্য মিষ্টি পানি পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। এ ছাড়া এ মৌসুমে নদী ও খালে যে পরিমাণ পানি থাকে তাও লবণাক্ত হয়ে যায়। নলকূপেও পানির স্তর কমে যায়। যার কারণে সবজি উৎপাদন করতে পারছিল না কৃষক। দক্ষিণাঞ্চলের ১৪টি জেলার মধ্যে বরগুনা জেলায় রয়েছে ৭৮৪৪ হেক্টর লবণাক্ত জমি। উপকূলীয় অঞ্চলের মোট কৃষি জমি লবণাক্ততায় আক্রান্ত। প্রতি বছর এ লবণাক্ত জমির পরিমাণ বেড়েই চলছে। উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে লবণসহষ্ণিু সবজি চাষ করে অনাবাদি জমিকে আবাদের আওতায় আনার জন্য উন্নয়ন সংগঠন কোডেক ‘দি সল্ট সলিউশন’ প্রকল্পের মাধ্যমে বরগুনা, খুলনা, বাগেরহাট ও পটুয়াখালী জেলার প্রায় ১৫ হাজার কৃষক নিয়ে কাজ করছে। সদর উপজেলার কৃষক জয়নব বিবি বলেন, লবণের কারণে ৭ বছর ধরে আমরা জমিতে কোনো ফসল ফলাতে পারতাম না। এ প্রকল্পের আওতায় আমাদের লবণসহিষ্ণু সবজি বীজ, বেড, নালা পদ্ধতি, মাটি ব্যবস্থাপনা ও জৈব বালাইনাশক পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে সবজি উৎপাদনে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বর্তমানে আমার কোনো জমি অনাবাদি নেই। বরগুনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মতিয়ুর রহমান বলেন, কৃষি বিভাগের কর্মীরা মাঠপর্যায়ে লবণসহিষ্ণু জমিতে সবজি উৎপাদনের পদ্ধতি কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন; পাশাপাশি বেসরকারি সংগঠনগুলো এ সহায়তা দেওয়ায় বরগুনায় লবণসহিষ্ণু জমিতে উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু সবজি নয়, লবণাক্ত জমিতে এখন বিভিন্ন জাতের ধান উৎপাদনে কৃষক এগিয়ে আসছে।

সর্বশেষ খবর