বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
স্মরণসভায় বক্তারা

বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষের জীবন পাল্টে দেওয়ার কারিগর স্যার আবেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্র্যাক প্রতিষ্ঠাতা বিশ্ববরেণ্য সমবায় সংগঠক স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্মরণসভা উপলক্ষে গতকাল রাজধানীর কুড়িলে বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি (বিআইসিসি) যেন বিশিষ্টজনদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল। ব্র্যাক আয়োজিত স্মরণসভায় দেশ-বিদেশের সমাজচিন্তক, সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, উন্নয়নকর্মী, শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, গবেষক, গণমাধ্যমব্যক্তিত্ব, সংস্কৃতিসেবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন। প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্মরণে আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা বলেন, ফজলে হাসান আবেদ তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে শুধু ব্র্যাকের মতো একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানই গড়ে তোলেননি, বরং বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের জীবনমান পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছেন। ব্র্যাক কিংবা বৃহত্তর উন্নয়ন অঙ্গনের প্রায় সব ক্ষেত্রেই অসংখ্য নেতৃত্ব তৈরি করেছেন তিনি। স্মরণসভা শেষে ব্র্যাক গ্লোবাল বোর্ডের চেয়ারপারসন আমিরা হক জানান, টানা পঞ্চমবারের মতো বিশ্বসেরা এনজিওর স্বীকৃতি পেয়েছে ব্র্যাক।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের শিক্ষক ড. মার্থা চেন। জাতিসংঘের মহাসচিবের পাঠানো বিবৃতি পড়ে শোনান জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক ও ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো। স্যার ফজলে হাসানের পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন তাঁর মেয়ে তামারা আবেদ ও ছেলে শামেরান আবেদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, সাবেক পরররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলার, অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের চার্জ  দ্য অ্যাফেয়ার্স পেনি মর্টন, ডিএফআইডির বাংলাদেশ প্রধান জুডিথ হার্বার্টসন, বিশিষ্ট আইনবিদ ড. কামাল হোসেন, বিএনপি নেতা ড. মঈন খান, অধ্যাপক মো. ইব্রাহিম, রাশেদ খান মেনন এমপি, ড. আইনুন নিশাত, খুশি কবীর, জুয়েল আইচ প্রমুখ। ড. ইউনূস বলেন, বিশ্বজুড়ে এনজিও সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাকেই পাল্টে দিয়েছিল আবেদ। তাঁর হাত ধরেই এনজিও এক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। তাই আলোচনাসভা বা কয়েকটি বই প্রকাশ করেই আবেদকে স্পর্শ করা যাবে না। বিশেষ করে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে আবেদের স্বপ্ন ও চিন্তা-ভাবনাকে  ধরার চেষ্টা করতে হবে।

রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষা বিস্তারে কাজ করা এনজিওগুলোর একটি মোর্চা গঠনকল্পে স্যার ফজলে হাসান আবেদ ‘গণসাক্ষরতা অভিযান’ গঠন করেছিলেন। আজ ২৩২টি এনজিও এর সদস্য। এর পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন  প্রভৃতি ক্ষেত্রেও তিনি উন্নয়নকর্মীদের কাছে ছিলেন বটবৃক্ষের মতো। আমরা তাঁর চিন্তা- চেতনা, আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করে যাব।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমাদের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অনেক জনসেবামূলক কাজে আবেদ ভাই অকুণ্ঠচিত্তে সহায়তা করেছেন। আমরা একটি কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টার গড়ে তুলতে যাচ্ছি, যাতে বছরে ১ হাজার ট্রান্সপ্লান্ট করা সম্ভব হবে। সেই সেন্টারটির নাম আমরা রাখতে চাই স্যার ফজলে হাসান আবেদের নামে।

সর্বশেষ খবর