সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
জেলার রাজনীতি কুমিল্লা

ক্ষমতা চর্চায় আওয়ামী লীগ চুপ করে আছে বিএনপি

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লা উত্তর-দক্ষিণ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের প্রায় সবাই ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতিতে ব্যস্ত। দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের খোঁজ নেওয়ার সময় কারও নেই। বিশেষ দিবস ছাড়া দলীয় অফিসের তালা খোলা হয় না। রয়েছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল।

আর বিএনপি আছে পুলিশকে দোষ দিয়ে চুপ মেরে থাকার রাজনীতি নিয়ে। নেতাদের অভিযোগ, পুলিশের মামলার কারণে তারা মাঠে নামতে পারছেন না। দলের দুর্দিনেও নেতারা ব্যস্ত গ্রুপিংয়ে।  কেউ বাদ-জোহর মিলাদ পড়ালে একই মসজিদে একই হুজুর দিয়ে আরেক পক্ষ বিকালে মিলাদ পড়ান। দলের প্রায় সবাই ক্ষমতার চর্চা নিয়ে ব্যস্ত। দলকে সময় দেওয়ার সময় নেই অনেক নেতার। দক্ষিণ জেলার বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগে তুষের আগুন জ্বলছে। কুমিল্লার রাজনীতিতে সদরে ঐতিহ্যবাহী কোন্দল অব্যাহত রয়েছে। শহরে কেউ অনুষ্ঠান করেন টাউন হলে, কেউ করেন মডার্ন কমিউনিটি সেন্টারে। কুমিল্লার দেবিদ্বার, মুরাদনগর, চান্দিনা, দাউদকান্দি, হোমনা, তিতাস ও মেঘনা উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা উত্তর জেলা। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯২ সালে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম সম্মেলন হয়। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ দীর্ঘ তিন দশকেও একটি দলীয় কার্যালয় তৈরি করতে পারেনি। চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়কে তারা ব্যবহার করছেন। ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর দীর্ঘদিন পরে একটি সম্মেলন হয়েছে। এতে সভাপতি করা হয়েছে ম. রুহুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে রোশন আলী মাস্টারকে। পরিচ্ছন্ন ও ত্যাগী নেতাদের নেতৃত্বে আনায় খুশি কর্মীরা। তবে তিন মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। সম্মেলনের আগে চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি কমিটি করা হয় অধ্যাপক আলী আশ্রাফ এমপির ছেলে মুনতাকিম আশরাফ টিটুকে সভাপতি করে। এ নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত গ্রুপ খুশি নয়। তাদের অভিযোগ, এই কমিটির অনুমোদন নেই। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব দিয়ে এই কমিটির অবৈধ অনুমোদন করা হয়েছে। বিএনপি নেতাদের দাবি সরকারের মামলা নির্যাতনের কারণে তারা ঠিকমতো মাঠে নামতে পারছেন না। সভাপতি রাবেয়া চৌধুরী বয়সের ভারে ন্যুব্জ। তিনি কোনো কর্মসূচিতে আসতে পারেন না। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপিতে সাধারণ সম্পাদক আমিন-উর রশিদ ইয়াছিন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর গ্রুপিং দীর্ঘদিনের। এখন তাদের মাঠের কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায় না। কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান বলেন, উত্তর জেলায় কোনো রাজনীতি নেই। এখানে চলছে কোটার রাজনীতি। যারা এমপি প্রার্থী হন তাদের লোকজনকে পদ দেওয়া হয়। আন্দোলন-সংগ্রামের লোকজনের কোনো গুরুত্ব নেই।

জেলায় জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই বললে চলে। এখানে জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত মহিলা এমপি অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান। মহানগরের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম সেলিম বলেন, জেলায় জাতীয় পার্টির মোটামুটি কার্যক্রম রয়েছে। কুমিল্লায় জামায়াতে ইসলামীকে মাঠে দেখা যায় না। তবে তারা গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম করছে বলে জানা গেছে। ছোট দলগুলোর মধ্যে জাসদ (ইনু), ন্যাপ ও কমিউনিস্ট কেন্দ্রকে মাঝেমধ্যে মাঠে দেখা যায়। এ ছাড়া সাম্যবাদী দল, গণআজাদী লীগ ও মজদুর পার্টির কার্যক্রম রয়েছে বলেও জানা গেছে। জেলায় এলডিপি, কল্যাণ পার্টি, খেলাফত মজলিস ও লেবার পার্টিরও কিছু কার্যক্রম রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর