সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

পাখির মেলা চা বাগানের জলাধারে

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

পাখির মেলা চা বাগানের জলাধারে

বাগানের চারপাশে উঁচু টিলায় সবুজ চায়ের বাগান। মধ্যখানে সমতলে জলাধার। জলাধারের নীল জলে ফুটেছে লাল শাপলা। রয়েছে কচুরি পানা। টিলা থেকে জলাধারের পাড় পর্যন্ত নেমে এসেছে চায়ের গাছ। এ যেন এক অনন্য সৌন্দর্য্য। আর এ জলাধারে বসেছে পাখির মেলা। এমনিতেই চা বাগানের সবুজের সমারোহে অবারিত সৌন্দর্য্য, আর চলতি শীত মৌসুমে পাখিদের আগমনে আরও মনোমুগ্ধ হয়ে উঠেছে শ্রীমঙ্গলের রাজঘাট চা বাগানের পরিবেশ। শহর থেকে বাগানের দূরত্ব প্রায় উনিশ কিলোমিটার। বাগানের চা কারখানা থেকে আধা কিলোমিটার এগোলেই রাস্তার বাম পাশে এ জলাধার। সারা দিন পাখির কিচিরমিচির শব্দে নীরব নির্জন চা বাগানে এ এক অন্য রকমের আবহের সৃষ্টি করে তুলেছে। বাগানের ভিতর দিয়ে রাস্তায় চলাচলকারী পথচারিরা মনের আনন্দে উপভোগ করছেন পাখিদের জলকেলি। দূর-দূরান্ত থেকে আসতে শুরু করেছে পাখিপ্রেমীরাও। সরজমিন দেখা যায়, বাগানের ৯, ১০ ও ১১ নং সেকশনের টিলায় সবুজ চায়ের বাগান। আর এ তিন টিলার মধ্যে প্রাকৃতিকভাবেই প্রায় ১০ একর আয়তনের একটি জলাধারের সৃষ্টি হয়েছে। জলাধারে ফুটেছে লাল শাপলা, আর কচুরিপানা। এই কচুরিপানা আর শাপলার পাতা-লতায় বসে আছে হাজার হাজার পাখি। তারা কখনো ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়াচ্ছে নীল আকাশে, কখনো উঠে এসে খুনসুঁটি করছে জলাশয়ের নীল জলে। জলাশয় ঘিরে হাজার পাখির কুঞ্জনে এক মধুময় সুরের আবহ বিরাজ করছে। সকাল হলেই পাখিরা উঠে যায় খাবার সন্ধানে। আর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই এরা আশ্রয় নেয় এ জলাধারে।

চা বাগানের শ্রমিক সুশেন কর্মকার বলেন, জলাশয়ে সবসময় পানি থাকে। পাখিরা সারা দিন জলাশয়ে খেলা করে। পাখিদের দেখার জন্য অনেক মানুষ আসে। প্রথম এদের সংখ্যা কম ছিল। এখন বছর বছর এদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাগানের টিলাক্লার্ক মো. নূরুল হক বলেন, চার পাঁচ বছর ধরে  জলাধারে হাঁস জাতীয় পাখি আসছে। শীতের শুরুতে এরা আসে এবং শীত শেষ হয়ে গেলে চলে যায়। বাংলাদেশ বার্ডক্লাবের প্রেসিডেন্ট ইনাম আল হক বলেন, সরালী হাঁস শীতের সময় জলাশয়গুলোতে আশ্রয় নেয়। আর গ্রীষ্মে এরা ধান খেতে চলে যায়। যেহেতু চা বাগানে বাইরের লোক বেশি যেতে পারে না, তাই চা বাগান তাদের জন্য বেশি নিরাপদ। বাগান কর্তৃপক্ষকে এ পাখিদের নিরাপত্তার বিষয়টি একটু খেয়াল রাখতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর