মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বিএনপি নেতাদের বিবাদে কেন্দ্রীয় যুবদলে নেতৃত্বশূন্য সিলেট

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সবসময়ই অংশীদারিত্ব থাকত সিলেটের। এ জেলার নেতাদের দখলেই থাকত বেশিরভাগ বিভাগীয় পদ। কিন্তু এবার ঘটেছে ব্যত্যয়। গত বৃহস্পতিবার যুবদলের ১১৪ সদস্যের ঘোষিত আংশিক কমিটিতে ঠাঁই হয়নি সিলেট জেলার কোনো নেতার। কেন্দ্রে এই নেতৃত্বশূন্যতার জন্য সিলেট বিএনপির দুই নেতার বিবাদকে দায়ী করছেন যুবদলের নেতা-কর্মীরা। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির ও কেন্দ্রীয় সদস্য, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর দ্বন্দ্বের রেশ ধরেই যুবদলের কমিটিতে সিলেটকে নেতৃত্বশূন্য থাকতে হয়েছে বলে দাবি দলীয় নেতা-কর্মীদের। গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে সিলেট জেলা যুবদলের ২৮ সদস্যের ও মহানগর যুবদলের ২৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বলয়ের নেতাদের দিয়ে কমিটি ঘোষণা করায় অসন্তোষ দেখা দেয় মেয়র আরিফ অনুসারীদের মধ্যে। এর জের ধরে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিএনপির চার নেতা। পরে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে তারা এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ান। এ নিয়ে সিলেট যুবদলে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়। নগরীতে পাল্টাপাল্টি মিছিল ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। সিলেট জেলা ও মহানগর শাখায় কর্তৃত্ব হারানোর পর যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দিকে তাকিয়ে ছিলেন আরিফ অনুসারীরা। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ঘোষিত কমিটিতেও হতাশ হয়েছেন তারা। কমিটিতে বিভাগীয় সহসভাপতি হয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি আনসার উদ্দিন, সহসাধারণ সম্পাদক হয়েছেন হবিগঞ্জের ইলিয়াস মিয়া ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন মৌলভীবাজারের জাকির হোসেন উজ্জ্বল। অভিযোগ উঠেছে আরিফ বলয়কে ‘মাইনাস’ করতে খন্দকার মুক্তাদির ‘তদবির’ করে বিভাগীয় পদগুলো সিলেট বিভাগের বাকি চার জেলায় দিয়েছেন। কেন্দ্রে নেতৃত্বশূন্যতা নিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী বলয়ের নেতা হিসেবে পরিচিত যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট জেলা শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাদিকুর রহমান সাদিক বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটিতে কেউ স্থান না পাওয়ায় সিলেটে যুবদল নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে এভাবে কমিটি হলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নেতৃত্বশূন্য করে সিলেটে মূলত যুবদলকে দুর্বল করা হয়েছে।’ খন্দকার মুক্তাদিরের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি বিশেষের কারণে আজ সিলেট যুবদলের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। দল নিয়ে এভাবে ষড়যন্ত্র কোনো শুভ ফল বয়ে আনে না’। খন্দকার মুক্তাদির অনুসারী সিলেট জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সবসময় সিলেটের অংশীদারিত্ব ছিল। কিন্তু এবার হয়নি। দলের ভালোর জন্য এবার হয়তো সিলেট বিভাগের অন্য জেলাগুলোতে নেতৃত্ব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে পুরো বিভাগে যুবদলের কার্যক্রম আরও শক্তিশালী হবে বলে আমরা মনে করছি।’

সর্বশেষ খবর