শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

কৃষ্ণচূড়ার রঙে রক্তিম প্রাঙ্গণ

মোস্তফা মতিহার

কৃষ্ণচূড়ার রঙে রক্তিম প্রাঙ্গণ

আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। রক্তে রঞ্জিত বায়ান্নর এই দিনটি সামনে রেখে আগের দিন হিসাবে গতকাল প্রাণের বইমেলাজুড়ে শোভা পেয়েছে রক্তরাঙা কৃষ্ণচূড়া। মেলায় আসা নারীদের খোঁপায় খোঁপায় সাদা ফুলের সঙ্গে থেকেছে লাল রঙের নানা ফুল। সবার পোশাকেও ছিল লালের ছোঁয়া। সব মিলে মেলায় তৈরি হয়েছিল রক্তিম দৃশ্যপট।

এই দিনটি ছিল ভাষাশহীদদের স্মরণে অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৯তম দিন। লোকারণ্য ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। বিকাল ৩টায় মেলার প্রবেশদ্বার উন্মোচনের পর শুরু হয় পাঠকের আনাগোনা। আর সন্ধ্যায় সেই আনাগোনা উপচে পড়া ভিড়ে পরিণত হয়। বইপ্রেমী পাঠকের ভিড়ে বিরাজ করে উৎসবের পরিবেশ। এদিনের মেলায় আগতরা বই কিনে উৎসবের রঙে ভিন্নতা এনেছেন। ব্যাগভর্তি একুশ স্মরণে নানা রচনাবলি, গোয়েন্দা কাহিনি, উপন্যাস ও সায়েন্সফিকশনের বই কিনেই প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেছেন বইপ্রেমীরা। বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগের তথ্যানুযায়ী মেলার ১৯তম দিনে নতুন বই প্রকাশ পেয়েছে ১৪৩টি। আর এ পর্যন্ত প্রকাশ পেয়েছে ২ হাজার ৭৩৪টি নতুন বই।

হতাশাগ্রস্ত পূর্বাংশের প্রকাশকরা : এবারের একুশে গ্রন্থমেলার পরিসর বাড়িয়ে সবার চোখ ধাঁধানো হলেও অর্ধশতাধিক স্টল মালিকের কাছে তা অভিশাপের মতো বলে জানিয়েছেন মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণের পূর্বদিকের প্রকাশকরা। ক্ষোভ প্রকাশে তারা জানান, অপরিকল্পিভাবে পরিসর বাড়ানোর কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একেবারে পূর্বাংশে ক্রেতাদের ভেড়ানোর কোনো সুযোগই রাখা হয়নি। যার কারণে পাঠক, বইপ্রেমী বা ক্রেতাদের দেখাই মিলছে না এসব স্টলে। মেলার গেট খোলা থেকে বন্ধ হওয়া অবধি বেচাকেনা শূন্য থাকায় একদিকে হাহাকার চলছে, অন্যদিকে হতাশ হয়ে পড়েছেন প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা। আয়োজকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে পূর্বাংশের বেশ কয়েকজন প্রকাশক জানান, পূর্বাংশে অর্ধশতাধিক স্টল বরাদ্দ করা হলেও এর আশপাশে কোনো প্রবেশপথ রাখা হয়নি। মূলমঞ্চ : বিকাল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আবুল কাসেম রচিত ‘বঙ্গবন্ধু ও চা শিল্প’ শীর্ষক আলোচনা। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দীপংকর মোহান্ত। আলোচনায় অংশ নেন মেসবাহ কামাল ও মোকাররম হোসেন। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ। হুইল চেয়ার হস্তান্তর : অমর একুশে গ্রন্থমেলায় শারীরিক সমস্যাগ্রস্ত মানুষের সহজে প্রবেশের সুবিধার্থে বেক্সিমকো ফার্মার পক্ষ থেকে ১৫টি হুইল চেয়ার হস্তান্তর করা হয়েছে।

 গতকাল দুপুরে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজীর কাছে বেক্সিমকো ফার্মার পক্ষে হুইল চেয়ারসমূহ হস্তান্তর করেন ডা. মোহাইমিনুল ইসলাম কৌশিক। এ সময় অমর একুশে গ্রন্থমেলা, ২০২০-এর সদস্যসচিব ড. জালাল আহমেদ ও গ্রন্থমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সুভাষ সিংহ রায় উপস্থিত ছিলেন।

আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতে মেলার প্রবেশদ্বার খোলা হবে সকাল ৮টায় আর বন্ধ হবে রাত সাড়ে ৮টায়।

সর্বশেষ খবর