রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
জেলার রাজনীতি নীলফামারী

বড় দুই দলে পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রস্তুতি

আবদুল বারী, নীলফামারী

নতুন উদ্দীপনা নিয়ে দল ও জনগণের জন্য কাজ করতে চান আবারও দায়িত্ব পাওয়া জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এদিকে জেলা বিএনপিতেও সম্মেলন হওয়ার পর নেতা-কর্মীরা বেশ উৎফুল্ল। শুরু হয়েছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া। নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ঠাঁই পেতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা। গেল ৫ ডিসেম্বর দীর্ঘ ১৩ বছর পর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ সভাপতি এবং অ্যাডভোকেট মমতাজুল হক পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কমিটিতে পদপ্রত্যাশীরা বলছেন, মনেপ্রাণে মুজিব আদর্শে বিশ্বাসী এবং ত্যাগীদের পাশাপাশি ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা যেন স্থান পান এই কমিটিতে। বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় আন্দোলন-সংগ্রামে নিবেদিত কর্মীরা এবং নব্বইয়ের দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত নেতাদের যেন মূল্যায়ন করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা মিজানুর রহমান বলেন, নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় যারা ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন, তারা দলে মূল্যায়িত হননি। দু-চারজন থাকলেও তারা দায়িত্ব পালন করতে পারেননি সঠিকভাবে। দলীয় সূত্র জানায়, ২০০৬ সালের পর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২০১৯ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় নেতা তৈরি এবং কর্মীদের মূল্যায়নের তেমন সুযোগ ছিল না। এবার সম্মেলনের মধ্য দিয়ে কিছুটা হলেও বিশেষ পরিবর্তন আসবে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণে দল ও সরকার দারুণ সফলতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকারে আসায় মানুষের যেমন প্রত্যাশা বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে কর্মীদেরও। এদিকে জেলা বিএনপিতেও সম্মেলন হওয়ার পর নেতা-কর্মীরা বেশ উৎফুল্ল। শুরু হয়েছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া। গেল ১৬ জানুয়ারি বিএনপি মহাসচিবের উপস্থিতিতে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলমগীর সরকার সভাপতি ও জহুরুল আলম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কমিটিতে স্থান পেতে জোর তদবির চালাচ্ছেন প্রত্যাশীরা। স্থানীয় নেতাদের দাবি, যোগ্য এবং দলের অনুগত কর্মীদের যেন এখানে ঠাঁই দেওয়া হয়। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম বলেন, ‘বিএনপি বড় একটি দল। সবাইকে তো আর কমিটিতে রাখার সুযোগ নেই। এর মধ্যে পরীক্ষিত ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বা কারাবরণ করেছেন যারা, তাদের বিষয়টি আমাদের দেখতে হবে। পাশাপাশি রাজপথে যাদের পাওয়া যায় তাদের নিশ্চয়ই আমরা মূল্যায়ন করব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রুত কমিটি কেন্দ্রের কাছে জমা দেব। অনুমোদিত হলে প্রকাশ করা হবে। এদিকে সরকারের শরিক জাপার ৭৭ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হলেও তৃণমূলে সাংগঠনিকভাবে বিস্তৃতি লাভ করতে পারছে না দলটি। গেল বছরের মে মাসে এই কমিটি গঠন হলেও একটিও বৈঠক করতে পারেনি তারা। করতে পারেনি কোনো ইউনিটের সম্মেলনও। তবে জাপা নেতাদের দাবি, জাতীয় পার্টি অনেক শক্তিশালী। জনসমর্থন দিন দিন বেড়ে চলেছে। নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমানকে আহ্বায়ক এবং সদর উপজেলার কুন্দপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী চৌধুরীকে সদস্যসচিব করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। জেলা জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব শাহজাহান আলী চৌধুরী বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের ভাগ্নে জেলার আহ্বায়ক হওয়ায় দলকে তিনি আরও শক্তিশালী করতে পারবেন। সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছেন তিনি। জাপার স্থানীয় নেতারা বলছেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্য থাকলেও সেটি শুধু ভোটের সময় পরিলক্ষিত হয়। বাকি সময় আমাদের মূল্যায়ন করে না তারা। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে জাপা নেতা-কর্মীদের মধ্যে।’ অন্যদিকে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বাম দলগুলো। জেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদসহ (ইনু) বাম দলগুলোর। বাম নেতারা এখন ব্যক্তিগত কাজ নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে নীলফামারীতে জামায়াতের কার্যক্রম প্রকাশ্যে দেখা না গেলেও গোপনে পালিত হচ্ছে দলীয় সাংগঠনিক কর্মসূচি। এখানে নীরবে নিজেদের সাংগঠনিক অবস্থান ধরে রেখেছে জামায়াত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর