পারিবারিক বিরোধের জের ধরে সৃষ্ট সহিংসতার মামলায় ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছে আদালত। রায়ে আসামি ইব্রাহিমকে বই পড়ার ও গাছ লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাগুরার মুখ্য বিচারিক আদালতের হাকিম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান সোমবার এ রায় দেন। আসামি ইব্রাহিমের বাড়ি জেলার মহম্মদপুর উপজেলার হরেকৃষ্ণপুর গ্রামে। তার বাবার নাম হান্নান মোল্লা। ২০১৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পারিবারিক বিরোধের জের ধরে হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের মোছাম্মাৎ শায়লা আক্তারকে কুপিয়ে আহত করেন প্রতিবেশীরা। এ ঘটনায় শায়লা আক্তারের ছেলে মোহাম্মদ রকি মহম্মদপুর থানায় ইব্রাহিম (৩০), কামাল (২২) ও চায়না বেগমকে (৫০) আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণে চায়না বেগম ও কামাল হোসেন নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। অন্যদিকে ছয় মাসের কারাদন্ড ভোগের পরিবর্তে সংশোধনের জন্য আসামি ইব্রাহিমকে দন্ডবিধির ৩২৪ ধারার পরিবর্তে প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে এক বছর সময়ের জন্য সাতটি শর্তে আদালত প্রবেশন মঞ্জুর করে। এই প্রবেশন চলাকালে আসামি ইব্রাহিমকে বিচারক যে সাতটি শর্ত পূরণের শর্ত দিয়েছেন সেগুলো হলো- প্রবেশনকালে আসামি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত হবেন না বা একই ধরনের অপরাধ আর করবেন না, শান্তি বজায় রাখবেন এবং ভালো ব্যবহার করবেন, আদালত ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তলব করলে যথাসময়ে উপস্থিত হবেন, মাদক বা নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করবেন না, খারাপ সঙ্গীর সঙ্গে মিশবেন না, প্রবেশনকালে আসামি মুক্তিযুদ্ধের ওপর দুটি বই (জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’ ও রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা ‘একাত্তরের চিঠি’) এবং ইসলাম ও নৈতিকতার ওপর দুটি বই পড়বেন, একটি সিনেমা (আগুনের পরশমণি) দেখবেন, প্রবেশনকালে আসামি পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল হিসেবে পাঁচটি গাছ (দুটি বনজ ও তিনটি ফলদ) রোপণ করবেন। শর্ত ভঙ্গ হলে আসামি ছয় মাসের কারাদন্ড ভোগ করবেন।
