শনিবার, ৭ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

ধোলাইখাল ব্র্যান্ডে বিশাল সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধোলাইখাল ব্র্যান্ডে বিশাল সম্ভাবনা

ইঞ্জিন-যন্ত্রাংশ, গাড়ির খুদে পার্টসসহ প্রায় দুইশ প্রকার মেশিনারিজ উৎপাদন ও বাজারজাতের বিরাট সম্ভাবনার খাত হয়ে উঠেছে ‘ধোলাইখাল ব্র্যান্ড।’ এ শিল্পের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত আট লাখ লোকের জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে। ধোলাইখাল ব্র্যান্ডের কারিগররা বাইসাইকেল থেকে শুরু করে সব ধরনের গাড়ি, ট্রাক্টর, ক্রেন, রি-রোলিং মিল এমনকি ট্রেনের বগিসহ যাবতীয় যন্ত্রাংশ অনায়াসে প্রস্তুত করছেন। বুয়েটের এক রিপোর্টে বলা হয়, দেশের হাল্কা প্রকৌশল শিল্পে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ রকমের যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছে। যার মধ্যে ১৩৭টি আইটেম এরই মধ্যে বিশ্বের ১৭টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, দেশে ২৬ হাজার কোটি টাকার যন্ত্রাংশ চাহিদার বিপরীতে মাত্র ৯ হাজার কোটি টাকার পণ্য উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। দেশের বাজারে এই শিল্পের এতটাই চাহিদা যে, ক্রেতারা যন্ত্রাংশ তৈরির জন্য উদ্যোক্তাদের অগ্রিম অর্থ দিয়ে বুকিং দিয়ে রাখছেন। অথচ দুই দশক আগেও বিভিন্ন শিল্প খাত ও পরিবহন সেক্টরে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের পুরোটাই আমদানি করা হতো। ধোলাইখাল ব্র্যান্ডের আদলে যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারী খুদে কারখানার বিস্তৃতি ঘটেছে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও যশোর, বগুড়া, সিলেট, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে। দেশের ১৮টি জেলায় লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে ৫০ হাজার ক্ষুদ্র এবং ১০ হাজার এসএমই কারখানা রয়েছে। এখানকার শ্রমিকদের বেশির ভাগই শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। নেই পুঁথিগত কারিগরি শিক্ষা। হাতের অভিজ্ঞতা আর চোখের মাপে তারা নিখুঁত থেকে নিখুঁততর মেশিনারি পার্টস তৈরি করে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী, এ শিল্পের রপ্তানি ছিল ৬৮ কোটি ৮০ লাখ ডলারের। কিন্তু প্রণোদনাসহ সুযোগ-সুবিধাহীন অবস্থায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরেই রপ্তানি আয় কমে দাঁড়ায় ৩৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারে। ধোলাইখাল ব্র্যান্ডের উদ্যোক্তারা বিভিন্ন সরকারি-আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানে সাব-কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে বিদেশনির্ভরতা কমিয়ে এনেছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে, বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন, বাংলাদেশ টেক্সটাইলস মিলস কপোরেশন, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর, বন্দর ও সমুদ্র পরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, তিতাস, বাখরাবাদ ও জালালাবাদ গ্যাস কোম্পানি, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়মিতভাবে যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ সরবরাহ করা হচ্ছে। এ খাতের উদ্যোক্তারা কাক্সিক্ষত সফলতা অর্জনে পুঁজি, প্রযুক্তি, শিল্পপার্ক স্থাপনসহ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা জরুরি প্রয়োজন বলে মনে করেন।

সর্বশেষ খবর