শিরোনাম
রবিবার, ৮ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হাজার কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা

জেনারেটর সরবরাহ ঘিরে চীনা ও ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের নামে উড়ো চিঠি দিয়ে সময়ক্ষেপণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুই ইউনিটের জেনারেটর মেরামত ও মালামাল সরবরাহ নিয়ে হাজার কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মেরামত ও সরবরাহ প্রক্রিয়াকে নিয়মের বাইরে নিতে অপতৎপরতা চালাচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। এতে ব্যয় বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বহুগুণ। পাশাপাশি এই জটিলতায় হুমকিতে পড়তে যাচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া। দীর্ঘসূত্রতার ফলে পুরো ইউনিট বসে যাওয়ার শঙ্কাও করছেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা। জানা যায়, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪ ও ৫  নং ইউনিটের জেনারেটর মালামাল সরবরাহ কাজের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে গত ডিসেম্বরে। এই দুই ইউনিটের কপিরাইটপ্রাপ্ত প্রস্তুতকারক তোশিবা জাপান। কপিরাইট নিয়মানুসারে এই দুই ইউনিটের জেনারেটর মালামাল সরবরাহ ও সংশ্লিষ্ট কাজ করতে পারবে শুধু তোশিবা জাপান বা তাদের মনোনীত প্রস্তুতকারকই।  অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এ কাজ করানো সম্ভব নয়। বিপিডিবির টেন্ডারেও এই শর্ত সংযোজিতই আছে। কিন্তু টেন্ডার আহ্বানের পর ভারতীয় প্রতিষ্ঠান মেসার্স এডিসন ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস ও চীনা প্রতিষ্ঠান ভাইওথ হাইড্রো সাংহাই লিমিটেডের নাম ব্যবহার করে ঘোষিত দরপত্র থেকে কপিরাইট শর্ত বাদ দিতে অব্যাহতভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এই দুই প্রতিষ্ঠান এ ধরনের জেনারেটরের প্রস্তুতকারক ও সরবরাহকারী না হলেও এদের নাম ব্যবহার করে বিপিডিবির কাছে একের পর এক চিঠি দেওয়া হচ্ছে। অভিন্ন ভাষার হুবহু চিঠি পাঠানো হচ্ছে চীনা ও ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের নামে। কিন্তু এই দুই প্রতিষ্ঠানের কারও এ ধরনের কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই।  টেন্ডারে যেসব মালামাল সরবরাহের কথা বলা হয়েছে তারা এসব মালামাল এর আগে কখনই সরবরাহ করেনি। নিজেরা এসব মালামাল প্রস্তুত করতে হলে তোশিবা জাপানের কাছ থেকে যে অনুমোদনের প্রয়োজন হয়, এই দুই প্রতিষ্ঠানের সেটাও নেই। তার পরও এই দুই প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতেই বারবার টেন্ডারের সময় বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এতে ইউনিটে থাকা জেনারেটরগুলো ক্রমেই আগের চেয়ে খারাপ অবস্থায় চলে যাচ্ছে।  অথচ বাংলাদেশের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮- এর ৭৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদি পেটেন্ট, ব্যবসায়িক গোপনীয়তা ও একক স্বত্বাধিকারের (কপিরাইট) কারণে একই ধরনের পণ্য প্রস্তুতকরণে অন্যদের নিবৃত্ত রাখা হয়, সে ক্ষেত্রে কপিরাইটভুক্ত পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা কেবলমাত্র একক কপিরাইটধারীর নিকট থেকে সংগ্রহ করতে সরাসরি চুক্তি প্রয়োগ করা যাবে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এডিসন ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস ও ভাইওথ হাইড্রো সাংহাইয়ের নামে দেওয়া চিঠিগুলোর স্বাক্ষরও জাল করা হয়েছে। স্বার্থান্বেষী মহলকে কয়েকজন সরকারবিরোধী কর্মকর্তা সহায়তা করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ খবর