রবিবার, ৮ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণে মজুদ বাড়াচ্ছে সরকার

গুদাম খালি রাখতে জেলায় জেলায় চিঠি

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

রমজান মাসে অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে পণ্য মজুদ করে রেখে, সিন্ডিকেট গড়ে দ্রব্যমূল্য বাড়াতে না পারে- সেই লক্ষ্যে এবার সরকার নিজেই পণ্য মজুদের উদ্যোগ নিচ্ছে। আর সংগৃহীত পণ্য মজুদে যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয়, সে জন্য দেশের বিভাগীয় ও গুরুত্বপূর্ণ জেলায় গুদাম খালি রাখার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের কাছে চিঠি পাঠানোর সুপারিশ করেছে রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে দেশের ১২টি জেলায় ১০ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার গুদাম খালি রাখার সুপারিশ জানায় সংস্থাটি। পণ্য মজুদের জন্য নির্ধারিত জেলাগুলো হচ্ছে- ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, মৌলভীবাজার, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, মাদারীপুর, ঝিনাইদহ ও বগুড়া। সংস্থাটি বলেছে ১ এপ্রিল থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সময়ে এই গুদামগুলো তাদের দরকার পড়বে।

বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে নেওয়া ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ টিসিবির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, টিসিবির মাধ্যমে এবার প্রতিবারের তুলনায় বেশি পণ্য বিক্রির, যাতে অসাধু চক্র কোনো সুযোগ নিতে না পারে; এসব কার্যক্রম পরিচালনায় যদি সংস্থাটির জনবল সংকট থাকে, তবে অতিরিক্ত জনবল সংযুক্ত করা হবে; পণ্য মজুদ রাখতে গুদামের সংকট থাকলে যেন আগেভাগেই গুদাম ভাড়া করা হয়; উপরন্তু পণ্য কিনতে যে অর্থের প্রয়োজন পড়বে সময়মতো তা দেওয়ার বিষয়েও নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। সূত্রগুলো জানায়, রমজান উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ বাস্তবায়ন করতে টিসিবি মোট ১ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন পণ্য সংগ্রহ ও বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজার মেট্রিক টন ভোজ্যতেল, ৩০ হাজার মেট্রিক টন চিনি, ৩০ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ, ৮ হাজার মেট্রিক টন ছোলা, ৩ হাজার মেট্রিক টন মশুর ডাল এবং ৫০০ মেট্রিক টন খেজুর সংগ্রহ করবে সংস্থাটি। তবে বিপুল পরিমাণ এই পণ্য মজুদ রাখার মতো গুদাম নেই সংস্থাটির। টিসিবির কর্মকর্তারা জানান, তাদের যে ৮টি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে সেখানে স্থাপিত গুদামগুলোর পণ্যের ধারণক্ষমতা মাত্র ২১ হাজার ৭৪০ মেট্রিক টন। আসন্ন রমজান উপলক্ষে এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি কুমিল্লা, মাদারীপুর, ঝিনাইদহ ও বগুড়া জেলায় ভাড়া গুদামে ক্যাম্প অফিস স্থাপন করেছে। এসব গুদামের ধারণক্ষমতা সব মিলিয়ে ৩২ হাজার ৫৪৩ মেট্রিক টন, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পণ্য সংগ্রহ করা হলে মাত্র এক চতুর্থাংশ মজুদ করা যাবে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. হাসান জাহাঙ্গীর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেন, বর্তমানে টিসিবির নিজস্ব গুদামসহ ভাড়াকৃত গুদামে যে পরিমাণ ধারণক্ষমতা আছে তাতে করে কোনোভাবেই রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের মজুদ, বিতরণ ও বিক্রয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে পণ্য মজুদ ও সংরক্ষণের জন্য জেলা পর্যায়ে আপদকালীন সময়ের জন্য অতিরিক্ত গুদাম প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর