মঙ্গলবার, ১০ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

কুষ্টিয়ায় জমেছে লালন স্মরণে বাউল উৎসব

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় জমেছে লালন স্মরণে বাউল উৎসব

কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ স্মরণে জমে উঠেছে তিন দিনের বাউল উৎসব। কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল রাতের প্রথম প্রহর থেকে চলেছে দোল পূর্ণিমা অনুষ্ঠান। আর সকাল থেকে সন্ধ্যা এবং তারপর সারারাতের জন্য শুরু হয়েছে অষ্টপ্রহরের কর্মসূচি। আজও রাতভর উন্মুক্ত মঞ্চে চলবে লালনের গান আর দর্শন চর্চা নিয়ে আলোচনা। অনুষ্ঠানকে ঘিরে ছেঁউড়িয়ায় বিরাজ করছে অন্যরকম পরিবেশ। বাউল ভক্তদের ভাষ্য অনুযায়ী, এ পরিবেশে নেই কোনো পাওয়ার আশা, আছে শুধু সাঁইজীর বাণীর কাছে নিজেকে সমর্পিত করার আকাক্সক্ষা। তাঁদের মতে, ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ এভাবেই নিজেকে গড়ার উপদেশ দিয়েছিলেন লালন। তিনি সহজিয়া বা অহিংস মানবতার ব্রত নিয়ে দেহতত্ত্ব, ভাবতত্ত্ব, গুরুতত্ত্বের বাণী সমৃদ্ধ গান করে গেছেন।

 তাঁর এই অমর সৃষ্টি সংগীত কোনো ধর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সব ধর্মের ঊর্ধ্বে থেকে মরমি সাধক লালন সাঁইজি মানবমুক্তির জন্য সৃষ্টি করেছিলেন ফকিরি মতবাদ। এবারের লালন স্মরণোৎসব আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে কালী নদীর তীরের মাঠে বিশাল মেলার মাধ্যমে। আখড়ার বাইরে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসেছে এই বারোয়ারি মেলা। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ৩ দিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে লালন একাডেমি। সরেজমিনে দেখা গেছে, উৎসবে যোগ দিতে এরই মধ্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন সাধু-গুরু, বাউল, ভক্তরা। ছোট দলে ভাগ হয়ে দরদ ভরা গলায় গেয়ে চলেছেন লালনের গান। লালনের আখড়াবাড়ির ভিতরে ও আশপাশের অঞ্চল জুড়ে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে থাকছেন ভক্তরা। সবমিলে উৎসব অঙ্গন পরিণত হয়েছে গুরুশিষ্যের মিলন মেলায়। আর সাধুরা বলছেন তাঁরা মিলিত হন জ্ঞানচর্চার জন্য। কারণ গুরুবাদী ধর্মে গুরুই প্রধান। লালন অনুসারিরা বলেন, লালনের অহিংসার বাণী বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে পারলেই  কেবল সার্থক হবে আয়োজন। এ উৎসবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সাধুদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তার জন্য সব ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর