শনিবার, ১৪ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
বাংলাদেশি পাসপোর্টে ভারতীয় সৌদিতে

হাফিজ জঙ্গি নাকি মাদক ব্যবসায়ী?

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে পুলিশের প্রতিবেদন গোপন করে ভারতীয় নাগরিককে পাসপোর্ট দেওয়ার ঘটনায় বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালকসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কিন্তু যে ভারতীয় নাগরিককে এ পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছিল, সেই হাফিজ আহমেদের পরিচয় নিশ্চিত হতে তৎপরতা শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। ভারতের নাগরিক হয়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরব চলে যান হাফিজ আহমেদ। গোয়েন্দা সংস্থার ধারণা, এই হাফিজ আহমেদ জঙ্গি অথবা শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘ভারতীয় নাগরিককে পাসপোর্ট দেওয়া বড় ধরনের অপরাধ। হাফিজ আহমেদের বিরুদ্ধে ভারতে দু-তিনটি মামলা আছে। তবে ওই মামলাগুলো নাশকতাসংশ্লিষ্ট নাকি মাদকসংশ্লিষ্ট, তা আমরা এখনো নিশ্চিত নই। তবে এ দুটির যে কোনো একটি- সেটি প্রায় নিশ্চিত বিভিন্ন সংস্থা। হাফিজের সে বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’ মামলাসূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৬ জুন আসামি হাফিজ আহমেদ ভারতীয় নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও রাজশাহী নগরীর ছোট বনগ্রাম সপুরা এলাকার বাসিন্দা হিসেবে রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্টের জন্য প্রি-এনরোলমেন্ট (আবেদন) সম্পন্ন করেন। এরপর মামলার দুই নম্বর আসামি রঞ্জুলাল সরকার ওই আবেদনটি অবৈধভাবে নিজ হেফাজতে রাখেন। পাসপোর্টের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পন্ন করে ওই বছরের ১২ জুলাই পুলিশ প্রতিবেদনের জন্য ৪৩টি আবেদনপত্রের সঙ্গে হাফিজ আহমেদেরও প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠানো হয় নগর পুলিশের বিশেষ শাখায়। এরপর ৩১ জুলাই পুলিশের পক্ষ থেকে হাফিজ আহমেদকে ভারতীয় নাগরিক বলে প্রতিবেদন পাঠানো হয় পাসপোর্ট অফিসে। কিন্তু এ তথ্য গোপন করেন পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে ওই বছরের ১৬ আগস্ট পাসপোর্টটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুমোদনের জন্য মডিউলে চলে যায়। এরপর একই বছরের ৩০ আগস্ট পাসপোর্টটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদনের পর ওই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর পাসপোর্টটি গ্রহণ করেন হাফিজ আহমেদ। পাসপোর্ট পেয়ে তিনি বাংলাদেশ বিমানের বিজি ০০৩৫ ফ্লাইটযোগে ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি সৌদি আরবের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। এরপর তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে পাসপোর্টের আবেদনসহ অন্যসব কাগজপত্র রাজশাহী বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস থেকে গায়েব করে দেওয়া হয়। ভারতীয় একটি সংস্থার কাছ থেকে তথ্য পেয়ে বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা হাফিজ আহমেদের বিষয়টি নিয়ে তৎপর হলে এমন জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর পাসপোর্ট অফিসের কর্মচারী রঞ্জুলালকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

সর্বশেষ খবর