সোমবার, ১৬ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
নারী হত্যায় ছিনতাইকারীরা

ওদের টার্গেট ভোরের যাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোরের যাত্রীরাই ওদের টার্গেট। রিকশা, সিএনজি অটোরিকশার যাত্রী কিংবা প্রাতঃভ্রমণকারীদের অস্ত্র ঠেকিয়ে গতিরোধ করে চোখের পলকে ছিনিয়ে নেয় তাদের সঙ্গে থাকা সবকিছু। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ভোরে রাজধানীর মুগদা এলাকায় ওদেরই শিকার হয়েছিলেন নিহত তারিনা বেগম লিপা। রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে নির্মম মৃত্যু হয়েছিল লিপার। শনিবার মধ্যরাতে সেই মুগদা থেকেই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (পূর্ব) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সাহিদুর রহমান রিপনের একটি দল অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে চার ছিনতাইকারীকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই গ্রেফতারদের একজন স্বীকার করে নেন লিপা হত্যাকান্ডে  তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি। গ্রেফতাররা হলেন, মিজুয়ান মিয়া, শেখ লিটন, মো. আবদুল মজিদ ও রফিক হাওলাদার। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মিজুয়ান। বাকি তিনজনের মধ্যে লিটনকে ২ দিন, মজিদকে ৩ দিন ও রফিককে ১ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সিলেটের গোলাম কিবরিয়া ও তার স্ত্রী তারিনা বেগম লিপা দুই সন্তানসহ কমলাপুর রেলস্টেশনে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীদের একটি চক্র লিপার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তিনি রিকশা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

গতকাল দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, গ্রেফতারদের কাছ থেকে গুলিভর্তি একটি আগ্নেয়াস্ত্র, দুটি ছুরি ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত দুটি প্রাইভেট কার এবং নিহতের একটি ট্যাব ও নগদ এক হাজার ৭০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। লিপা নামের ওই নারী মারা যাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে পরদিন দেখে তারা মিরপুরে গা ঢাকা দেয়। মাঝে কিছুদিন বিরতি দিয়ে শনিবার রাতেও চক্রটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশে  বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গ্রেফতার মিজুয়ানের তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ভোরে তারা খিলগাঁও ফ্লাইওভার থেকে কমলাপুর স্টেডিয়ামের মাঝামাঝি অবস্থান করছিল। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে লিপা পরিবার রিকশাযোগে যাওয়ার সময় তার হাতে থাকা ব্যাগটি দেখে তা নেওয়ার জন্য টার্গেট করে এবং রিকশাকে প্রাইভেটকারযোগে ধীরগতিতে অনুসরণ করতে থাকে। পরে দক্ষিণ মুগদার ইউনিক বাস কাউন্টার অতিক্রম করার পরে তারা লিপার হাতে থাকা ব্যাগ ধরে টান দেয়। এ সময় লিপা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রিকশা হতে পড়ে মাথায় মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন। এডিসি রিপন বলেন, এই চক্রের প্রধান মনা পলাতক রয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৪টি মামলা আছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। শেখ লিটনের বিরুদ্ধেও ৪টি মামলা আছে। লিটন ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত গাড়ি সরবরাহ করে এই চক্রকে। ২৯ ফেব্রুয়ারি ওই ঘটনার পর তারা টয়েনবি রোড ফকিরাপুল, মতিঝিল, মিরপুর টেকনিক্যালে আরও কয়েকটি ছিনতাই করে।

সর্বশেষ খবর