বৃহস্পতিবার, ১৯ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

অবশেষে খালি পর্যটনকেন্দ্রগুলো

সমালোচনার মুখে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবশেষে খালি পর্যটনকেন্দ্রগুলো

সমুদ্র সৈকত পতেঙ্গা খালি করতে গতকাল পুলিশের মাইকিং -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলা এবং সতর্কতায় দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গতকাল থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে।

এ অবস্থায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র এবং কুয়াকাটার সমুদ্রসৈকতসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণে যেতে নিষেধ করেছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন। এখনো যারা ভ্রমণে রয়েছেন তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃপক্ষ।

পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে জনসমাগম নিষিদ্ধ : আমাদের চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। গতকাল দুপুরে সিএমপি এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এজন্য সমুদ্র্রসৈকতের প্রবেশপথে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে পর্যটকের ঢল নামে। এ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে গতকাল বিকাল থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে জনসমাগম কমে যায়। সাধারণত প্রতিদিন বিকাল থেকে এবং ছুটির দিনে দুপুরের পর থেকেই পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। সিএমপি কমিশনার মাহাবুবর রহমান বলেন, ‘উ™ভূত পরিস্থিতিতে সবার যখন সতর্কতার সঙ্গে বাড়িতে থাকার কথা, তখন অনেকেই পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ভিড় করছেন। তাই পুলিশের পক্ষ থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’ জানা গেছে, গতকাল সকাল থেকে পতেঙ্গা থানার উদ্যোগে পতেঙ্গাসহ আশপাশের এলাকায় মাইকিংয়ের মাধ্যমে সমুদ্রসৈকতে কাউকে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। পতেঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উৎপল বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা দুপুর থেকেই পতেঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করছি। তাছাড়া সৈকতে প্রবেশপথে ১০ জন পুলিশের একটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এখন কারোর সমুদ্রসৈকতে যাওয়ার সুযোগ নেই।’

নিষেধাজ্ঞা কক্সবাজারেও : আমাদের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কক্সবাজারের হোটেল মোটেল জোন ও সৈকত এলাকায় সব প্রকার জনসমাগম ও পর্যটক আগমনে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। গতকাল বিকাল থেকে জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সৈকত এলাকায় পর্যটকদের মধ্যে করোনা ঝুঁকি নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয় এবং তাদের নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরে যেতে বলা হয়। এরপর সৈকত এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আল আমিন পারভেজ বলেন, করোনা ঝুঁকি এড়াতে হোটেল মোটেল জোনে সভা সমাবেশ ও অনুষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া সৈকত এলাকায় পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। 

শ্রীমঙ্গলে পর্যটক আগমনে নিষেধাজ্ঞা : শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে পর্যটক আগমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। গতকাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয় থেকে এ নির্দেশ জারি করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, উ™ভূত পরিস্থিতি উন্নত না হওয়া পর্যন্ত উপজেলার সব হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও রেস্ট হাউসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পর্যটকদের বুকিং না নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আগাম বুকিংগুলোও বাতিল করার কথা বলা হয়েছে। পর্যটকদের ভ্রমণে প্রবলভাবে নিরুৎসাহিত করার কথা বলা হয়েছে।

সিলেটের সব পর্যটন কেন্দ্রে নিষেধাজ্ঞা : সিলেট প্রতিনিধি জানান, করোনাভাইরাসের কারণে সতর্কতা হিসেবে গতকাল থেকে সিলেটের সব পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক সমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশনা দিয়েছি, পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে যাতে লোক সমাগম না হয়।’

কুয়াকাটা প্রায় পর্যটকশূন্য : পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, করোনাভাইরাস যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে এজন্য প্রশাসনের তরফ থেকে ভ্রমণ, সভা, সমাবেশ-গণজমায়েত নিষিদ্ধ করায় সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা প্রায় পর্যটকশূন্য রয়েছে। গতকাল বিকাল পর্যন্ত স্থানীয় কিছু মানুষ সি-বিচে জড়ো হলেও সমুদ্র পাড়ে ভিড় না করে তাদের বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য করে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সিনিয়র এএসপি জহিরুল ইসলাম জানান, পর্যটকরা যেন ভিড় না করে সেজন্য নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর