শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা মোকাবিলায় কতটুকু প্রস্তুত চট্টগ্রাম

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

সমুদ্রবন্দর, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং প্রবাসীপ্রবণ এলাকার কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে চট্টগ্রাম। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চট্টগ্রামের প্রস্তুতি বলতে এখনো কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। এমন ঝুঁকির মধ্যেও দেশের বৃহৎ সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরে এখনো বসানো হয়নি থার্মাল স্ক্যানার। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসদের করোনারোধক পর্যাপ্ত পোশাক নেই। অপ্রস্তুত পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আতঙ্কিত চিকিৎসকরাও।

সমুদ্র ও বিমানবন্দরের কারণে চট্টগ্রাম সর্বোচ্চ ঝুঁকির মধ্যে থাকার কথা জানান চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের কারও যদি করোনাভাইরাস আক্রান্তের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে ঢাকা থেকে আইইডিসিআর’র লোকজন এসে স্যাম্পল নিয়ে যাবে। এরপর সেখান থেকে তিন ঘণ্টা পর ফলাফল পাওয়া যাবে। এখন পর্যন্ত ঢাকার বাইরে কিট নিয়ে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই ঢাকায় করোনার পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার ছিল তা আমাদের নেই। একে তো আমাদের চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত পোশাক ও যন্ত্রপাতি নেই, তার ওপর জনগণ সচেতন নয়। সব মিলিয়ে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কতটা ভালো প্রস্তুতি রয়েছে তা বলতে পারি না। জানা যায়, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সীমিত সামর্থ্য দিয়েই প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রামের প্রশাসন। করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, ফৌজদারহাটের বিআইডিআইডি। এ তিন হাসপাতালে আইসোলেশন বেড ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর বাইরে চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতাল ও বন্দর হাসপাতালও করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় উপজেলা পর্যায়ে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে দেশে করোনা রোগী চিহ্নিত হওয়ার পর থেকে হয়রানিতে পড়ছেন বিভিন্ন হাসপাতালে সর্দিজ্বর ও নিউমোনিয়ার রোগী এবং প্রবাসীরা। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে সর্দিজ্বর ও প্রবাসীরা চিকিৎসা নিতে গেলেই হাসপাতালে সৃষ্টি হচ্ছে আতঙ্ক। অনেক চিকিৎসক এই রোগীদের চিকিৎসা দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করা দেশগুলো থেকে আসা জাহাজগুলোকে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করে বন্দরে নোঙ্গর করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে বন্দরের জন্য একটি থার্মাল স্ক্যানার বসানো হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর