শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জনের মেয়ের বিয়ে অতিথি ৪০০

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

সর্বত্র মানুষ যখন করোনার আতঙ্কে ভীতসন্ত্রস্ত ঠিক তখনই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন মো. শাহ আলম নিজের চিকিৎসক মেয়ের ঘটা করে আকদ বিয়ে অনুষ্ঠান করেছেন। এতে অতিথি ছিলেন ৪০০ জন।

গতকাল শহরের ফারুকী পার্ক সংলগ্ন জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের ডরমেটরিতে থাকা সরকারি বাসভবনে এই আকদ বিয়ের আয়োজন করেন সিভিল সার্জন। বিয়ের আয়োজনে শামিল হন জেলার বিভিন্ন স্তরের চিকিৎসকরা। বিয়েতে প্রায় চারশ অতিথিকে আমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করা হয়েছে। তবে সিভিল সার্জন ঘরোয়া আয়োজন উল্লেখ করে বিয়েতে কোনো জনসমাগম করা হয়নি বলে দাবি করেছেন।

জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চিনাইর-চাপুইর গ্রামের  মোশারফ হোসেন মোল্লার ছেলে প্রকৌশলী মঈনুল  হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সিভিল সার্জনের  মেয়ে দন্ত চিকিৎসক শাননিন আলম মমোর বিয়ের আয়োজন করা হয়। জুমা নামাজের পর শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এতে যোগ দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া  জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ফায়েজুর রহমান, ফৌজিয়া আক্তার, সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, হবিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আজহারুর রহমান ও খোকন দেবনাথ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন ক্লিনিকের দন্ত চিকিৎসকদের একটি দল, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের সরকারী কর্মচারী ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানের জন্য প্রধান ফটকের ভিতরে ফুল দিয়ে একটি তোরণ নির্মাণ করা হয়। আর বাড়ির ভিতরে  তৈরি করা হয় প্যান্ডেল। ভিতরে একটি জায়গায় ১০টি বড় পাত্রে চলে রান্নার কাজ। খাবারের তালিকায় ছিল ভাত, গরুর মাংস, মুরগি, চিংড়ি, রুই মাছ, জর্দা, কোমল পানীয়, দই, পোলাও প্রভৃতি। বিয়ের ঘটনাটি জানাজানি হলে বিকাল পৌনে ৩টার দিকে সিভিল সার্জনের সরকারি বাসভবনের প্রধান ফটকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়া বিয়ে বাড়িতে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ফটকের বাইরে সিভিল সার্জন শাহ আলম নিজেই অবস্থান করেন। স্থানীয়রা জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য জনসমাগম এড়াতে সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। এই সময়ে ঘটা করে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল এই কর্মকর্তার মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা ঠিক হয়নি। সিভিল সার্জন শাহ আলম বলেন, এক মাস আগেই বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবারও মেয়ের গায়ে হলুদ ছিল। কোনো আয়োজন ছাড়াই স্বল্প পরিসরে বিয়ে হয়েছে। পরিবারের অনেক সদস্যকেও দাওয়াত দিতে পারিনি। জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেব। করোনাভাইরাসের জন্য জনসমাগম এড়িয়ে চলার জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। কেউই জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়।

সর্বশেষ খবর