শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি

নাটোরে বিরল জাতের হলুদ ড্রাগন চাষ

নাসিম উদ্দীন নাসিম, নাটোর

নাটোরে বিরল জাতের হলুদ ড্রাগন চাষ

নাটোরে ২০০৩ সালে ড্রাগনের অভিষেক ঘটে। এর মান উন্নয়নে পরিচালিত ধারাবাহিক গবেষণায় এবার নাটোরে ফলেছে হলুদ রঙের দু®প্রাপ্য ও নয়নাভিরাম ড্রাগন। ইতিমধ্যে মডার্ন হর্টিকালচার সেন্টার হলুদ ড্রাগনের চারা বাজারজাত করা শুরু করেছে। এস এম কামরুজ্জামানের তত্ত্বাবধায়নে নাটোরের মডার্ন হর্টিকালচার সেন্টারে থাইল্যান্ড থেকে আনা ড্রাগনের প্রথম চাষ হয়। ওই সময়ের অজানা এ গাছের ফল পেতে প্রায় তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ড্রাগনের চাষাবাদ কৌশল জানতে ২০০৯ সালে এস এম কামরুজ্জামান ভিয়েতনাম যান। সেখানকার হো চি মিন এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে ড্রাগন চাষের সব কিছুই রপ্ত করতে পেরেছিলেন তিনি। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পরিচালক হিসেবে অবসরগ্রহণ করে বর্তমানে দেশের মাটিতে প্রথম ফলিয়েছেন হলুদ রঙের দু®প্রাপ্য ড্রাগন। হলুদ আবরণের ভিতরে সাদা রঙের সুমিষ্ট ফলে টকের কোনো উপস্থিতি নেই। নিজস্ব জার্ম প্লাজম সেন্টারে রাখা বেশ কয়েকটি গাছে ফল ধরেছে। প্রতিটির ওজন ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম। কামরুজ্জামান জানান, ইকুয়েডরের হলুদ ড্রাগন অনেক আগে থেকে সংগ্রহে থাকলেও ছোট আকারের কারণে এর বাণিজ্যিক সম্ভাবনা কম। তাই ইসরায়েলের হলুদ ড্রাগন নিয়ে কাজ শুরু করি। ইসরায়েলের হলুদ ড্রাগন ২০১৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হনুলুলুর ফল উৎপাদক ফা হোয়াইটিকারের থাইল্যান্ডের বুরিরাম বাগান থেকে সংগ্রহ করি। আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করা হবে। পর্যায়ক্রমে চারা তৈরি ও বিপণনের মাধ্যমে দু®প্রাপ্য ও আকর্ষণীয় হলুদ ড্রাগন দেশে সহজলভ্য হবে। এদেশের আবহাওয়া ড্রাগন চাষের উপযোগী হলেও বৃষ্টি এবং ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রায় ড্রাগনের আকার ছোট হয়ে যায়।

 ড্রাগন শুধু দর্শনধারী এবং সুস্বাদুই নয়, গুণবিচারেও অনন্য। ক্যালরি কম থাকায় ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীরা অনায়াসে এ ফল খেতে পারেন। ড্রাগন রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে বলে এটি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। আয়রনের উৎস হিসেবে ড্রাগন রক্তশূন্যতা দূর করে। ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসে ভরপুর বলে ড্রাগন হাড় ও দেহের গঠনে ভূমিকা রাখে। ভিটামিন এ ও বি সমৃদ্ধ বলে  ¯œায়ুতন্ত্র ও দৃষ্টিশক্তির উপকার করে ড্রাগন। সর্বোপরি অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ভান্ডার হিসেবে এন্টি এজিং গুণাবলিতে সমৃদ্ধ ড্রাগন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, পুষ্টিমান ও আর্থিক দিক বিবেচনায় ড্রাগন অগ্রগামী এবং অপার সম্ভাবনাময় ফল। হলুদ রঙের ড্রাগনসহ নতুন জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে বৈচিত্র্যময় হবে এর সম্ভাবনাময় যাত্রা। নাটোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক স ম মেফতাহুল বারি আশা প্রকাশ করে বলেন, নাটোরে উদ্ভাবিত হলুদ ড্রাগন ভবিষ্যতে ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশে, হবে জনপ্রিয়।

সর্বশেষ খবর