রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

লাল নুড়িবাটান

আলম শাইন

লাল নুড়িবাটান

পান্থ-পরিযায়ী পাখি (চলার পথে যে পাখি স্বল্পসময়ের জন্য কোনো দেশে বিচরণ করে), আমাদের দেশে আসে নভেম্বরের শুরুতে, বিদায় নেয় মার্চের মধ্যে। সুলভ দর্শন। বাটান পরিবারের পাখির মধ্যে এরা মাঝারি আকৃতির। উপকূলীয় এলাকার জলাশয় বা নদ-নদীর বালুকাময় সৈকতে দেখা যায় এদের। জলের কিনার ঘেঁষে দ্রুত হেঁটে খাবার সংগ্রহ করে। ভূমিজ কীট প্রধান খাবার হলেও শিকার খুঁজতে খানিকটা পরিশ্রম করে। নুড়ি কিংবা মাটির ঢেলা সরিয়ে কীটপতঙ্গ খুঁজে বের করে। তাই এদের নামকরণের সঙ্গে ‘নুড়ি’ শব্দটি যুক্ত হয়েছে। সুর সুমধুর নয়। ডাকে ‘টুক-টুকাটুক’ শব্দে। অপেক্ষাকৃত ছোট দলে বিচরণ করে। পাখির বাংলা নাম ‘লাল নুড়িবাটান’, ইংরেজি নাম Ruddy Turnstone. বৈজ্ঞানিক নাম Arenaria interpres. এরা ‘পীত পাথুরে বাটান বা পাথর ঘোরানি বাটান’ নামেও পরিচিত। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ২২-২৪ সেন্টিমিটার। ঠোঁট ঊর্ধ্বমুখী, কালো, খাটো ও শক্ত। প্রজনন মৌসুমে গায়ের রং বদলায়। এ সময় মাথা, গলা, বুক সাদাটে দেখায়। তদুপরি উজ্জ্বল কালো ছোপ নজরে পড়ে। দেহের উপরাংশের পালক পাটকিলের ওপর সাদা-কালো ছোপ থাকে। স্ত্রী পাখির রঙে হেরফের রয়েছে। মাথার রং খানিকটা নিষ্প্রভ, তার ওপর সাদাটে ভাবটা কম। প্রজনন মৌসুমের বাইরে স্ত্রী-পুরুষ পাখি উভয়ের দেহের উপরাংশের রং অনুজ্জ্বল হয়। এ সময় মাথার রং বদলে গাঢ় বাদামি রং ধারণ করে। পা খাটো, কমলা লাল। লেজ খাটো। অপ্রাপ্তবয়স্কদের রং অনেকটাই ফিকে। প্রধান খাবার ভূমিজ কীটপতঙ্গ। এ ছাড়া জলজ শ্যাওলা খেতে পছন্দ করে। প্রজনন মৌসুম মে থেকে আগস্ট। প্রজননভূমি উত্তর মহাসাগরের আশপাশ এলাকা। বাসা বাঁধে নুড়ির ওপর ঘাস-লতা-পাতা বিছিয়ে। ডিম পাড়ে ২-৫টি, যা ফুটতে লাগে ২২-২৪ দিন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর