শুক্রবার, ৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

দুই বছর মেয়াদি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ

করোনা-অর্থনীতি নিয়ে পঞ্চবার্ষিক স্থগিত করাসহ ৮ দফা কর্মপরিকল্পনা সানেমের

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতিতে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেটি মোকাবিলায় দুই বছর মেয়াদি ‘পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা’ বা রিকভারি প্ল্যান গ্রহণের সুপারিশ জানিয়েছে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)। সংস্থাটি সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিক’ দুই বছরের জন্য স্থগিত রাখতে বলেছে। পাশাপাশি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে বেরোনোর জন্য বাংলাদেশের যে সময়সীমা রয়েছে, সেটি তিন বছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলেছে। বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ ধরনের সুনির্দিষ্ট আট দফা সুপারিশ করেছে সানেম। গতকাল গণমাধ্যমে এসব সুপারিশ পাঠানো হয় সংস্থাটির পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘অর্থনীতি যে স্বাভাবিক গতিতে চলছিল, করোনাভাইরাস সেখানে ভয়াবহ সংকট তৈরি করেছে। এ অবস্থায় গতানুগতিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা দিয়ে এ সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।’ ‘এ জন্য সরকারের যে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা রয়েছে, করোনা-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে তার অনেক কিছু বদলাতে হবে। এটি নতুনভাবে লেখা প্রয়োজন। এই পরিকল্পনার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে’- বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির এই শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে, গত ডিসেম্বরে যেমন ছিল।’

আর এ জন্য দুই বছর মেয়াদি ‘রিকভারি প্ল্যান’ দরকার বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। সানেম উল্লিখিত আট দফা হচ্ছে- প্রথম দফা, দুই বছর মেয়াদি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া; দ্বিতীয় দফা, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রারম্ভিক সময় দুই বছর পিছিয়ে ২০২২ সালে নিয়ে যাওয়া; তৃতীয় দফা, তৈরি পোশাক খাতসহ অন্যান্য রপ্তানিমুখী শিল্প এবং অভ্যন্তরীণ বাজারনির্ভর খাত ও এসএমই খাতে সহায়তা প্রদানের জন্য রাজস্ব উদ্দীপক (ফিসক্যাল স্টিমুলাস) প্যাকেজ ও মুদ্রাবিষয়ক নীতি প্রণয়ন করা; চতুর্থ দফা, দরিদ্র, অতিদরিদ্র, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং বর্তমান পরিস্থিতে আকস্মিকভাবে অসহায় হয়ে পড়া মানুষদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা ও পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা; পঞ্চম দফা, বাণিজ্য, কর কাঠামো এবং ব্যাংকিং সেক্টরে ‘রাজনৈতিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য’ কিছু নীতি সংশোধন করা; ষষ্ঠ দফা, রাজস্ব উদ্দীপনা (সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি ও কর কমানো) বাস্তবায়ন এবং মুদ্রাবিষয়ক নীতিকে সহজ করার জন্য অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের উপায় বের করা; সপ্তম দফা, কমপক্ষে তিন বছরের জন্য এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়কাল বিলম্বিত করা এবং অষ্টম দফা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সময়কাল ২০৩০ থেকে ২০৩৫-এ নিয়ে যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে জোর প্রচেষ্টা চালানো।

সর্বশেষ খবর