শুক্রবার, ৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

সংকটাপন্ন লজ্জাবতী বানর উদ্ধার

প্রতিদিন ডেস্ক

সংকটাপন্ন লজ্জাবতী বানর উদ্ধার

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার গ্রাম থেকে উদ্ধার করা সংকটাপন্ন প্রজাতির একটি লজ্জাবতী বানরের স্থান হয়েছে চিড়িয়াখানায়। বুধবার বিকালে বানরটি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সামান্য আহত বানরটির চিকিৎসা চলছে, সেটি মোটামুটি সুস্থ আছে। খবর বিডিনিউজের।

লজ্জাবতী বানর বা বেঙ্গল স্লো লরিস ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)-এর ২০২০ সালের তালিকায় সংকটাপন্ন (রেড লিস্ট) প্রজাতি হিসেবে দেখানো হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নের পূর্ব সোনাই গ্রামের একটি আকাশমনি বাগানে এলাকার তরুণরা মঙ্গলবার রাতে বানরটি দেখতে পেয়ে সেটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগে খবর দেন। ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সায়েদুল আরেফিন বলেন, ‘খবর পেয়ে বন বিভাগের লোকজনকে সেখানে পাঠাই। বুধবার তারা লজ্জাবতী বানরটি নিয়ে আসে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বানরটিকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে।’

চিড়িয়াখানার কিউরেটর শাহাদাত হোসেন শুভ জানিয়েছেন, বুধবার বিকালে লজ্জাবতী বানরটিকে আনা হয়। ‘এটি একটু আঘাত পেয়েছে। চিকিৎসা চলছে, এখন ভালো আছে।’ তিনি বলেন, ‘এটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ বানর। বয়স তিন বছরের মতো। দৈর্ঘ্য ১৮ ইঞ্চির মতো, ওজন সোয়া এক কেজি। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আগে থেকে আরেকটি পুরুষ লজ্জাবতী বানর আছে।’ লজ্জাবতী বানর ছোট আকারের। এটি বেঙ্গল স্লো লরিস নামে পরিচিত। স্তন্যপায়ী শ্রেণির লরিসিডি পরিবারের সদস্য এই বানর বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনের তফসিল-১ অনুসারে সংরক্ষিত প্রাণী।

নিশাচর এই বানর দিনের বেলায় গাছের উঁচু ডালে নিজেদের আড়াল করে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে সংরক্ষিত লজ্জাবতী বানর আইইউসিএনের তালিকা অনুসারে সংকটাপন্ন প্রজাতি। এরা নিশাচর। দিনের বেলা লোকালয়ে আসে না। সিলেট ও চট্টগ্রামের গভীর পাহাড়ি বনে এদের দেখা যায়। এরা বাঁশ ঝাড়ে বেশি থাকে। ‘নানা রকম বাগান করার জন্য পাহাড়ে আগুন দেওয়ায় এদের খাবার ও বাসস্থানের সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে হয়তো লোকালয়ে চলে এসেছে। এরা অত্যন্ত ধীর গতির ও ছোট আকারের হয়। এটি সুস্থ হলেই গভীর বনে ছেড়ে দেওয়া উচিত। বনই এদের আসল ঠিকানা।’ এর আগে ২০১৭ সালের আগস্টে রাউজান উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডে একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করেছিল স্থানীয়রা।

সর্বশেষ খবর