শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

গবাদিপশুর বন্ধু গো-বক

আলম শাইন

গবাদিপশুর বন্ধু গো-বক

দুধসাদা গায়ের রং। দলবদ্ধভাবে বিচরণকালে স্থানীয় দৃশ্যপট বদলে যায়। তখন মনে হয় বুঝি অদূরে প্রবহমান দুধের নহর। আকৃষ্ট চেহারার সঙ্গে চলন-বলনের যথেষ্ট মিল রয়েছে এদের। ভারিক্কি চলনে পা ফেলে হাঁটে। কণ্ঠস্বরেও রয়েছে ভারিক্কি ভাব। এরা স্থানীয় প্রজাতির পাখি। সুলভ দর্শন। দেশের সর্বত্রই নজরে পড়ে। বিশেষ করে গবাদি পশুর চারণভূমিতে এদের দেখা যায় বেশি। প্রজাতিটি নিরীহ স্বভাবের, হিংস্র নয়। বিচরণকালে একাকী কিংবা ছোট দলে ঘুরাঘুরি করে। গবাদিপশুর পায়ের কাছাকাছি অথবা পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ায়। শখের বশেই এরা কিন্তু পশুর পিঠে সওয়ার হয় না; একটা উদ্দেশ্য আছে। উদ্দেশ্যটি হচ্ছে ওদের শিকার গবাদিপশুর দেহে সহজলভ্য। গায়ের উকুন, জোঁক, এঁটুলি ইত্যাদি এরা খুঁটে খায়। এতে পশুরা আরামবোধ করে খানিকটা, ফলে এদের সঙ্গে সখ্য গড়তে গবাদিপশুর আগ্রহ থাকে সব সময়। মজার বিষয় হচ্ছে, বন্ধুত্ব এতটাই পাকাপাকি হয় যে, পশুদের চোখের দুই পাশের উকুন ঠুকরিয়ে খেলেও চোখের মণিতে ঠোঁটের আঁচড় লাগায় না। উল্লেখ্য, গবাদিপশুর সঙ্গে অধিক সখ্যতার কারণে এদের নামের অদ্যাক্ষরের সঙ্গে ‘গো’ শব্দটি যুক্ত হয়েছে।

পাখির বাংলা নাম : ‘গো-বক’, ইংরেজি নাম : ‘ক্যাটল ইগ্রেট’,  (Cattle Egret) বৈজ্ঞানিক নাম : Bubulcus ibis।

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ৫১-৫৮ সেন্টিমিটার। হালকা পাতলা গড়ন। দেহের সমস্ত পালক ধবধবে সাদা। প্রজনন সময়ে রং বদলায়। তখন মাথা, ঘাড়, পিঠ, গলার নিচে এবং বুক সোনালি বা বাদামি-কমলা রং ধারণ করে। ঠোঁট খাটো, হলদেটে। ঠোঁটের গোড়া পালকহীন সবুজাভ-হলুদ। পা ও আঙ্গুল কালো। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম হলেও পুরুষ পাখি আকারে খানিকটা বড়।

প্রধান খাবার : পোকামাকড়, জোঁক, ব্যাঙাচি ও ফড়িং। মাছের প্রতি এদের আসক্তি খুবই কম। প্রজনন মৌসুম মে-জুলাই। বাসা বাঁধে জলাশয়ের কাছাকাছি উঁচু গাছে। এ ছাড়াও বাঁশঝাড়ে এরা কলোনি টাইপ বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২১-২৩ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় নেয় ৪৫ দিনের মতো।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর