শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

এক গাছে ১৩ মৌচাক

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

এক গাছে ১৩ মৌচাক

কালের বিবর্তনে মৌমাছির সংখ্যা কমলেও এক গাছে ১৩টি মৌমাছির চাক লেগেছে। গত বছর এ গাছে ২২টি এবং তারও আগে ২৫-৩০টি মৌচাক দেখা গেছে বলে স্থানীয়রা বলছেন। দিনাজপুর সদরের আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ঘুঘুডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বিশালাকার একটি পিটালি গাছের ডালে ডালে এসব মৌমাছি চাক তৈরি করেছে। অনেকে এদিকে এলে গাছটির মৌচাকের দিকে একবার হলেও তাকান। প্রাকৃতিতে মৌমাছির সংখ্যা অনেক কমেছে। ফলবান বৃক্ষের ডালে, দালানের ছাদের নিচে, ভেন্টিলেটরে, বন-জঙ্গলে গাছের কোঠরে, মাটির গর্তে বা সুবিধাজনক স্থানেই সাধারণত মৌমাছি চাক করত। আম, জাম, কাঁঠাল এবং বিভিন্ন বুনো ফুলগাছসহ ফসলের ফুলের মধুর ওপর ভিত্তি করে প্রচুর মৌমাছির বসবাস ছিল গ্রাম-গঞ্জে। মৌমাছির প্রজনন বৃদ্ধি ও বসবাসের পরিবেশের অভাবে মুক্ত মৌমাছি ও মৌচাক হারিয়ে যাচ্ছে। আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বসবাসের উপযোগী পরিবেশের অভাব, খাদ্যের অভাব, ফসলে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ, আনাড়ি মধু সংগ্রহকারীদের দিয়ে মৌচাকে অগ্নিসংযোগে মৌমাছি পুড়িয়ে হত্যা করাসহ নানাবিধ কারণে মৌমাছি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তবে মধু সংগ্রহকারীরা বিভিন্ন ফসলের মাঝে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৌচাষ করছেন। বিভিন্ন স্থানে মধু সংগ্রহকারীরা জানান, ১৫-২০ দিন ঘোরাফেরার পর একটা মৌচাকও খুঁজে পাওয়া যায় না। যদিও কোথাও পাওয়া যায় তা আকারে ছোট। মৌমাছির সংখ্যাও আগের চেয়ে অনেক কম। আগে যেমন মধু পাওয়া যেত এখন সেটা আর নেই। কৃষি বিভাগ জানায়, ‘মধুর মধ্যে প্রচুর পুষ্টি ও খাদ্যগুণ রয়েছে। মধু দুধ বা পানি দিয়ে মিশ্রণ করে খেলে নিমিষেই হারানো শক্তি ফিরে পাওয়া যায়। দৈহিক গঠন ও সুস্বাস্থ্য তৈরি ছাড়াও মধু বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও কোমলতা বাড়ানোর জন্য মধু বিশেষভাবে উপকারী খাদ্য। মধুর সঙ্গে কালোজিরা মিশিয়ে খেলে স্বাস্থ্য অটুট থাকে। ঘুঘুডাঙ্গা এলাকার স্থানীয় যুবক বকুল জানান, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে এ গাছে এ মৌসুমে মৌমাছিরা চাক তৈরি করে। গত বছরও ২২টি চাক লেগে?ছিল। অতীতে ২৫ থেকে ৩০টি চাক লাগত এ গাছে। অ্যাডভোকেট জাকারিয়া হোসেন জানান, প্রতি বছর গাছটির মৌচাক স্কুল কর্তৃপক্ষ ডাক তোলেন। এ বছর সাড়ে ১২ হাজার টাকায় ওই গাছের মৌচাকগুলো বিক্রি হয়েছে। স্থানীয় মৌ-খামারি মোসাদ্দেক হোসেন জানান, এগুলো ভারতীয় প্রজাতির মৌমাছি। এগুলোর একেকটি মৌচাকে ১০ থেকে ১৫ কেজি মধু পাওয়া সম্ভব। বাজারে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় মধু বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বছর বসন্তকালে দিনাজপুরে এসব মৌমাছি চাক তৈরি করে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর