বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

লকডাউনে অন্তর্বর্তীকালীন বাণিজ্যে সার্ক দেশগুলো

সাত দেশের ট্রেড অফিশিয়ালদের ভিডিও কনফারেন্স

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

লকডাউনে অন্তর্বর্তীকালীন বাণিজ্যে সার্ক দেশগুলো

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সারা বিশ্বের মতো দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলো লকডাউনে চলে গেলেও বিপর্যয় ঠেকাতে এই সময়ে সদস্য দেশগুলো একে অন্যের সঙ্গে ‘জরুরি পণ্যের’ অন্তর্বর্তীকালীন বাণিজ্য চালু রাখবে। গতকাল সার্ক দেশগুলোর ট্রেড অফিশিয়ালদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক ভিডিও কনফারেন্সে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) শরীফা খান ভিডিও কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন। সদস্য দেশের মধ্যে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। পাকিস্তান এ কনফারেন্সে অনুপস্থিত ছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব ড. মোহাম্মদ জাফর উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ এশিয়ায় সম্ভাব্য বিপর্যয় মোকাবিলায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথম ‘সার্ক তহবিল’ গঠনের লক্ষ্যে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে এ ধরনের ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ওই কনফারেন্সে সক্রিয় অংশ নেন। সার্ক ট্রেড অফিশিয়ালদের নিয়ে গতকালের এ ভিডিও কনফারেন্সটি তারই ধারাবাহিকতা।

অন্তর্বর্তীকালীন বাণিজ্যে কার্যকর হবে যেসব নির্দেশনা : ১. সরকারি অফিসগুলো বন্ধ বা সীমিত পরিসরে কার্যকর থাকায় লকডাউন চলাকালে সার্ক দেশগুলোর কাস্টমস আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে মূল ডকুমেন্টস (হার্ডকপি) ছাড়াই ই-ডকুমেন্টে (সফটকপি) পণ্য খালাসের সুযোগ দেবে। পরে মূল ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে; ২. রাজস্বের ক্ষেত্রে সদস্য দেশগুলোর রাজস্ব বোর্ড ‘ব্যাংক গ্যারান্টি’ নিয়ে পণ্য ছাড়ের অনুমতি দিতে পারবে; ৩. শুল্কমুক্ত সুবিধায় পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে রুলস অব অরিজিনের স্ক্যান কপি বা ই-কপি জমা দেওয়া যাবে; এবং মূল ডকুমেন্টস ছাড়াই যাতে ই-ডকুমেন্টস দেখে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো পেমেন্টস পরিশোধ করে সেজন্য সার্ক দেশগুলো নিজ নিজ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলবে। আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে ভিডিও কনফারেন্সের সভাপতি শরীফা খান জানান, লকডাউনের পর বিভিন্ন দেশের সরকারি অফিস-আদালত বন্ধ হয়ে গেছে বা সীমিত পরিসরে চলছে। এই আপৎকালে মূলত জরুরি পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতেই সার্ক ট্রেড অফিশিয়ালদের এই ভিডিও কনফারেন্স। এখানে মূল ডকুমেন্টের বাইরে ই-ডকুমেন্ট, স্ক্যান কপি দিয়ে যাতে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে জরুরি পণ্যের আমদানি-রপ্তানি চালু রাখা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ‘জরুরি পণ্য’ হিসেবে নিত্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল, ওষুধ ও মেডিকেল ইকুইপমেন্টকে গণ্য করা হবে।

জরুরি নয় বা বিলাসী কোনো পণ্য এ সুবিধা পাবে না বলে জানান তিনি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এ এইচ এম আহসান জানান, শুল্কমুক্ত সুবিধায় পণ্য রপ্তানি করতে গেলে ব্যবসায়ীদের রুলস অব অরিজিনের ছাড়পত্র নিতে হয়।

এ মুহূর্তে যেহেতু ইপিবির কার্যক্রম সীমিত আকারে চলছে, সেজন্য আমাদের সুপারিশ ছিল যাতে রুলস অব অরিজিনের স্ক্যান কপি বা ই-কপি দিয়েই পণ্য ছাড়ের সুযোগ দেওয়া হয়। সার্ক দেশগুলো এ সুপারিশ গ্রহণ করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর