পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা থেকে ৭০০ শ্রমিক বিদায় দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল সেতুর পাইলিং ও পিলারের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করেই তাদের বিদায় জানানো হয়। মূল সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবদুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, পদ্মা সেতুর পাইলিং ও পিলারের কাজে সহায়তার জন্য অস্থায়ীভাবে যে সব দেশি শ্রমিক ২০১৫ সালে পাইলিং থেকে শুরু করে মূল সেতুর পিলার বসানো কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমবিইসি কর্তৃক অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োজিত ছিলেন মঙ্গলবার শেষ পিলারের ফর্মওয়ার্ক রিমুভ ও ফিনিশিং সম্পূর্ণ শেষ হওয়ায় চলতি মাসের বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানটি ৭০০ শ্রমিককে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিদায় দিয়েছে। তবে এসব শ্রমিক বেকার হবেন না জনিয়ে এ প্রকৌশলী আরও জানান, একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমবিইসি পদ্মা সেতুর রেল লিংক প্রকল্পের কাজ পাওয়ায় এ ৭০০ শ্রমিককে সেখানে স্থানান্তর করে তাদের কাজ দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে একই ধরনের আরও কয়েক দফায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত অস্থায়ী শ্রমিকদেরকে, টোল প্লাজা, এক্সপ্রেসওয়ে, এপ্রোজ সড়কের কাজ শেষ হওয়ায় বিদায় দেওয়া হয়েছে। এ পর্যায়ে সেতুর কাজ শেষের পথে আসায় শ্রমিকও কম লাগছে বলে তিনি জানান। দেশের সর্ব বৃহৎ ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর নদীতে ৪২টি পিলার এবং দুই পাড়ে আরও ১২টি করে ২৪টি পিলার মোট ৬৬টি পিলারের কাজ ফিনিশিংসহ শেষ। পুরোদমে চলছে স্প্যান বসানো ও স্প্যানের ওপরে পাত বসানোর কাজ এবং মাঝে রেললাইনের কাজ। ইতিমধ্যে ২৮টি স্প্যান পিলারে বসে সোয়া ৪ কিলোমিটার সেতু দৃশ্যমান হয়েছে। এ সেতুতে মোট ৪১টি স্প্যান বসানো হবে যার ২৮টি ইতিমধ্যে পিলারে বসানো হয়েছে আর বাকি আছে ১৩টি স্প্যান বসানোর কাজ। করোনা আতঙ্ককে ছাপিয়ে পদ্মা বহুমুখী প্রকল্পের নানামুখী কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে। সেতুর উভয় পাড়ে ফোর লেন এক্সপ্রেসওয়ে চালু হয়েছে, টোল প্লাজার কাজ শেষ। চলছে নদী শাসন, নদী শাসনের জন্য পদ্মার তীরে নদীতে বিপুল পরিমাণ ব্লক ফেলা, বিভিন্ন স্থানে ড্রেজিংয়ের কাজ, স্প্যানের মাঝে রেলের পাত বসানোর কাজসহ যে দিকে তাকাবেন শুধু কাজ আর কাজ। পদ্মা সেতুর বিশাল এই কর্মযজ্ঞ রাতের আঁধারকেও হার মানায়। সারা বিশ্ব করোনাতঙ্কে নাজেহাল হলেও পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় কর্মমুখর দেশি-বিদেশি শ্রমিকরা।
